রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দুই ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ৫০ কোটি নগদ মিলেছিল। এবার ফ্রিজ হওয়া ৮টি অ্যাকাউন্টেও কোটি কোটি টাকার হদিশ পেল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এমনই খবর ইডি সূত্রে। কার টাকা, নগদের উৎস কী, কোনও লেনদেনের জন্য এই টাকা রাখা হয়েছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখছেন ইডির কর্তারা। বিষয়টি আদালতেও জানাতে চলেছেন তাঁরা।
বেলঘরিয়ার দেওয়ানপাড়ার মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে অর্পিতার প্রতিপত্তি নজর কাড়ার মতো। মডেলিং, অভিনয়ের পাশাপাশি চালাতেন ব্যবসাও। তাঁর নামে দু’টি জিএসটি নম্বরের হদিশ মিলেছে বলে ইডি সূত্রে খবর। একটি জিএসটি নম্বর রয়েছে তাঁর নেইল আর্ট পার্লারের নামে। কিন্তু অপর জিএসটি নম্বরটি কোন ব্যবসার স্বার্থে ব্যবহার হত, তা এখনও অজানা। সেই তথ্য জানতে জিএসটি দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগের পথে হাঁটছে ইডি। অর্পিতার নামে কোন কোন ব্যবসা চলত, তাতে কার কার যোগ রয়েছে, সেই সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখতে চাইছেন তদন্তকারীরা।
এসএসসি দুর্নীতির তদন্তে নেমে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তার করেছে ইডি। গ্রেপ্তার হয়েছেন তাঁর ঘনিষ্ঠ মডেল-অভিনেত্রী অর্পিতাও। সেই মডেল-অভিনেত্রীর সম্পত্তির হিসেব দেখে তদন্তকারীদের চক্ষু চড়কগাছ। নামে-বেনামে একাধিক ফ্ল্যাট, বাগানবাড়ি। আর দুই ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা নগদ, ৪ কোটির বিদেশি মুদ্রা, সোনা-হিরের গয়না, সোনা-রুপোর কয়েন, এমনকী সোনার বাটও। কোথা থেকে এল সম্পত্তি, এই প্রশ্নের জবাব চায়। তাই অর্পিতা-পার্থকে জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি তাঁদের আর্থিক লেনদেনের দিকেও কড়া নজর রাখছে তদন্তকারী সংস্থা। তদন্তের সেই সূত্র ধরেই শনিবার তাঁদের ৮টি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়। অ্যাকাউন্ট ব্যালান্স চেক করতেই চমকে ওঠেন ইডি কর্তারা। সবমিলিয়ে সেখানে রয়েছে ৮ কোটি টাকা।
গত কয়েক মাসে ওই অ্যাকাউন্টগুলি থেকে কোথায় কোথায় টাকা পাঠানো হয়েছে, কে কে অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেছে, কেন এত টাকা অ্যাকাউন্টে রাখা হয়েছিল, পুরো বিষয়টিই খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। স্বাভাবিকভাবেই একটা প্রশ্ন উঠে আসছে, এই মোট ৫৮ কোটি টাকার মালিক কে? কোন পথে এসেছে এই টাকা? যদিও পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলছেন, তিনি এ টাকার মালিক নন। আবার অর্পিতার দাবি, তাঁর ফ্ল্যাটে কত টাকা রাখা হত, তিনি নাকি জানতেনই না। তাহলে এই বিপুল অর্থ কার? টাকার আসল মালিক কে, সেটাই খুঁজে বের করা এখন ইডির কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
Be the first to comment