দলের নির্দেশিকা অগ্রাহ্য করে নির্দল প্রার্থী হিসেবে যাঁরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাঁদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। বুধবার সন্ধের মধ্যে তাঁদের তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বহিষ্কার করা হবে। নদিয়ার রানাঘাটের একটি সভা থেকে এই বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বুধবার ছিল নদিয়া জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের পুর নির্বাচনের প্রস্তুতি সভা। রাণাঘাট নজরুল মঞ্চে সেই সভার আয়োজন করা হয়েছিল। এই প্রস্তুতি সভা মঞ্চে উপস্থিত হয়েই নির্দল প্রার্থীদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেখানে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, নির্দল হিসেবে যাঁরা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন, তাঁদের মনোনয়ন তুলে নিয়ে দলের কর্মীদের হয়েই কাজ করতে বলা হয়েছিল।
এ দিন পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘যাঁরা নির্দল হিসেবে লড়ছেন ও তৃণমূল কংগ্রেসের পরিচিত মুখ, তাঁদের তালিকা তৈরি হয়ে গিয়েছে।’ নদিয়া জেলা নেতৃত্বকেও একটি তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে বলে জানান পার্থ। তাঁদের সুপারিশ অনুযায়ী তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, এঁরা দলের তরফে বারবার বলা সত্ত্বেও দলের কথা শোনেননি। পার্থর দাবি, এই সব নেতারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আনুগত্য দেখিয়ে দল করতেন, কিন্তু নিজেদের প্রতি আনুগত্য এবং নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্যই তাঁরা নির্দল হয়ে দাঁড়িয়েছেন। তালিকা তৈরি করে, তাঁদের সকলকেই বহিষ্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন পার্থ। বুধবার সন্ধ্যায় তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করা হবে বলে জানান তৃণমূলের মহাসচিব।
এ দিনের পুর নির্বাচনে প্রস্তুতি সংক্রান্ত সভায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, রাজ্যসভার সাংসদ সুধাংশু শেখর রায় সহ জেলার অন্যান্য় নেতারা।
দলীয় নেতৃত্বের তরফে আগেই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল ওই নির্দল প্রার্থীদের। কয়েকদিন আগেই সাংবাদিক বৈঠকে নির্দলদের কড়া বার্তা দিয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। লড়াই থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য নির্দলদের ৪৮ ঘণ্টা সময়ও বেঁধে দিয়েছিলেন তিনি। এই সময়ের মধ্যে প্রার্থী পদ প্রত্যাহার করতে হবে বলে বার্তা দেওয়া হয়েছিল। না হলে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেয় তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তারপরও কথা না শোনায় এই কড়া পদক্ষেপের পথে হাঁটছে ঘাসফুল শিবির।
উল্লেখ্য, ১০৮টি পুরসভার মধ্যে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই তা নিয়ে অস্বস্তিতে পড়তে হয় তৃণমূলকে। অভিযোগ ওঠে, দলের ওয়েবসাইটে যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, আর জেলায় জেলায় যে তালিকা পাঠানো হয়েছে, তার মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। তার জেরে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান দলীয় কর্মী, সমর্থকরা। শুধু তাই নয়, মদন মিত্রের মতো দলের ‘হেভিওয়েট’ নেতাও প্রকাশ্যে সরব হন এই প্রার্থী তালিকা নিয়ে। সম্প্রতি, বিতর্কিত প্রথম প্রার্থী তালিকা তৃণমূলের সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
Be the first to comment