”আমি চোর নই। আমার মানবাধিকার আছে।” আজ, সোমবার আলিপুর আদালতে জামিনের আর্জি জানিয়ে এমনই মন্তব্য করেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। যদিও তাঁর সমস্ত আবেদন, অনুরোধ খারিজ হয়ে যায় আদালতে। জামিনের আবেদন খারিজ করে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ফের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল আলিপুর আদালত। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আগামী ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত তাঁকে জেলেইই থাকতে হবে। এসএসসি-এর প্রাক্তন কর্তা এসপি সিনহা, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় ও সুবীরেশ ভট্টাচার্যকেও ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিন শুনানির আগে আদালত কক্ষে দাঁড়িয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাতর আর্জি, “আমার শরীর ভাল নেই। আমার শরীর আর দিচ্ছে না। সব কেস একসঙ্গে আনা হয়েছে। কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না। তবুও রোজ রোজ আমার বিরুদ্ধে নতুন নতুন মামলা হচ্ছে। আমাকে আমার মতো থাকতে দিন, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিন। আমাকে সার্ভাইভ করতে দিন প্লিজ। কিছু খুঁজে না পেয়ে ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা করছে তদন্তকারী এজেন্সি।”
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এদিন পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়কে আলিপুর আদালতে পেশ করা হলে তাঁর জামিনের জন্য সওয়াল করেন তাঁর আইনজীবী। আদালতে পার্থর আইজীবী দাবি করেন, তদন্তে সহযোগিতা করছেন তাঁর মক্কেল। কিন্তু পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে হেনস্থা করছে সিবিআই। কোনও ষড়যন্ত্রে সামিল ছিলেন না পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ৫ জনের যে উপদেষ্টা কমিটি তৈরি করা হয়েছিল, তাতেও ছিলেন না পার্থ।
পালটা সিবিআই তাঁর জামিনের বিরোধিতায় ফের “প্রভাবশালী” তত্ব সামনে আনে। আদালতকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী জানান, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের থেকে প্রতিদিনই নতুন নতুন তথ্য বেরিয়ে আসছে। সেসব খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই মুহূর্তে জামিন দিলে সমস্যা হবে। মামলার অনেক গুরুত্ব আছে। এখনও তদন্তের বাকি আছে। আরও অনেক অভিযুক্তের নাম বেরবে। আলিপুর আদালতের বিচারক সিবিআইকে পালটা জিজ্ঞাসা করেন, তদন্ত শেষ করতে আর কতদিন সময় লাগবে? তাতে সিবিআই ৬ মাসের সময়সীমার কথা জানায়।
এদিকে এদিন আদালত থেকে বেরনোর সময় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, “দলের সঙ্গে আছি, ১০০ বার আছি।” এদিন পার্থর পাশাপাশি আদালতে হাজির করা হয়েছিল তাঁর বিশেষ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্য়ায়কেও। আদালতের কাছে অর্পিতার আর্জি ছিল, ”আমার মায়ের সঙ্গে একটু কথা বলার সুযোগ দিন। ১৫ দিনের জন্য যোগাযোগ করতে পারেননি কেউ। গত ১৫ দিনে মাত্র ৫ মিনিট করে তিনবার টাইম দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ফোন আন রিচেবেল।” মা বা বোনের সঙ্গে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে কথা বলতে দেওয়ার জন্য আর্জি জানান তাঁর আইনজীবী। যদিও আর্জি খারিজ হয়ে গিয়েছে।
Be the first to comment