উপাচার্যদের ফোন করে ভয় দেখাচ্ছেন রাজ্যপাল, বিস্ফোরক অভিযোগ শিক্ষামন্ত্রীর

Spread the love

এবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখরকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলন করে শিক্ষামন্ত্রী অভিযোগ তুললেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে রাজ্যপাল হিসেবে সরাসরি প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করছেন বলে রাজ্যপাল৷

তবে এখানেই থেমে থাকেননি শিক্ষামন্ত্রী, উপাচার্যদের ফোন করে ভয় দেখানো হচ্ছে বলেও রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সরব হন শিক্ষামন্ত্রী। রাজ্যপালের এই আচরণে তিনি ব্যথিত৷ শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমি অবাক হচ্ছি রাজ্যপালের কাণ্ডকারখানা দেখে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে প্রতিবন্ধকতা করার চেষ্টা করছেন রাজ্যপাল। আমরা বলছি রাজ্যপালকে বিধি মেনে কাজ করুন। কিন্তু উনি তা করেননি। রাজ্যপাল বিতর্কের পরিবেশ তৈরি করে বাঁচার চেষ্টা করছেন। তিনি যে ভাবে চলছেন, তাতে রাজ্যপালের সম্মানিত আসনকে কলুষিত করছেন। এটা নিশ্চিতভাবে বলে দিতে চাই বিধানসভার বাইরে কেউ নয়।’

সোমবার বিকেলেই বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য পদে বিশ্ববিদ্যালয়ের জুওলজি বিভাগের অধ্যাপক গৌতম চন্দ্রকে নিয়োগ করেন। আর এই পদে নিয়োগ করাকে ঘিরেই শুরু হয় বিতর্ক। উচ্চশিক্ষা দফতরের তরফে অভিযোগ তোলা হয়, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা না করেই রাজ্যপাল সহ-উপাচার্য পদে নিয়োগ করেছেন। এক্ষেত্রে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য নিয়োগের আইন মানেননি বলে অভিযোগ তোলে উচ্চশিক্ষা দফতর। শেষমেশ সোমবার সন্ধ্যায় রাজ্যপালের নিয়োগকে কার্যত বাতিল করে উচ্চশিক্ষা দফতর৷ কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের জুওলজি বিভাগের অধ্যাপক আশিস কুমার পানিগ্রাহীকে সহ উপাচার্য পদে নিয়োগ করা হয়।

একই পদে দুজনের নিয়োগকে ঘিরেই এখন উঠেছে প্রশ্ন। যদিও উচ্চশিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের যুক্তি, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য নিয়োগের জন্য যে আইন বলে দেওয়া আছে সেই আইন মেনেই কাজ করা হয়েছে। আইনে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, উপাচার্য, সহ-উপাচার্য নিয়োগের জন্য শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে নেবেন রাজ্যপাল। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা করা হয়নি বলেই অভিযোগ উচ্চশিক্ষা দফতর ও শিক্ষামন্ত্রীর। তাই রাজ্যপালের দেওয়া নাম কার্যত বাতিল করে উচ্চশিক্ষা দফতরই সহ- উপাচার্য পদে নিয়োগ করল। সে ক্ষেত্রে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৮ নম্বর ধারা প্রয়োগ করে এই নিয়োগ করা হয়েছে বলে নির্দেশিকায় জানিয়েছে উচ্চ শিক্ষা দফতর।

আর এই নিয়োগবিধিকে ঘিরেই এখন সংঘাত রাজ্য- রাজ্যপালের। শিক্ষা মন্ত্রী এদিন বলেন, “আমরা নির্ভর করেছিলাম রাজ্যপালের ওপর। রাজ্যপাল এই ভাবে নিয়োগপত্র স্বাক্ষর করবেন এটা আমি ভাবিনি। এটা অসাংবিধানিক। শিক্ষা দফতর আইন মেনেই কাজ করছে। রাজ্যপালের এই কাজের আমরা নিন্দা করি। উনি উপাচার্যদের ফোন করে ভয় দেখাচ্ছেন। আমাকে উপাচার্য পরিষদের তরফে এটা জানানো হয়েছে। ওঁর এই আচরণে আমি ব্যথিত।” যদিও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই মন্তব্যের পর এখনও রাজ্যপাল তাঁর প্রতিক্রিয়া দেননি।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*