আচার্যের ক্ষমতা খর্বের নতুন বিধি চালু হওয়ার পর শুক্রবার ডাকা হয় উচ্চ শিক্ষা সংসদের বৈঠক। বৈঠকের আলোচনার বিষয় নিয়ে জল্পনা চলছিল শিক্ষা মহলে। অনেকেই মনে করছিলেন, নতুন বিধি নিয়েই উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনা করবেন শিক্ষামন্ত্রী। আর প্রত্যাশিতভাবে শুক্রবার উচ্চশিক্ষা সংসদের বৈঠকে নতুন বিধি নিয়ে উপাচার্যদের অবগত করলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এ ছাড়া আগামী বছর রাজ্যের প্রথম এডুকেশন ফেয়ার নিয়ে আলোচনা হয় এদিনের বৈঠকে ৷ আলোচনা হয়েছে CBCS, শূন্যপদ পূরণ, আধিকারিকদের বেতন বৃদ্ধির বিষয়েও ।
শুক্রবার বিকাশ ভবনে উচ্চ শিক্ষা সংসদের দশম বৈঠক হল। বৈঠকে পার্থবাবু বলেন, ২০১৭-এর আইনের নতুন যে বিধি, সেই বিধিগুলি সম্পর্কে উপাচার্যদের অবহিত করা হয়েছে। নতুন বিধির প্রতিলিপি তাঁদের দিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সমাবর্তন স্থগিত বা বাতিল করে দেওয়া হতে পারে এই আশঙ্কা প্রকাশ করে উপাচার্য ও শিক্ষা দপ্তরের প্রধান সচিব মণীশ জৈনকে চিঠি দিয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সংগঠন JUTA। সে বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, যে সকল বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যেই সমাবর্তন নির্ঘণ্ট ঘোষণা করেছে, নতুন বিধির জন্য সেই অনুষ্ঠান আটকাবে না। যারা বলছে নতুন বিধির ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকার হরণ হবে, তারা ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।
এদিনের বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। আলোচ্য বিষয়গুলো নিয়ে পার্থবাবু বলেন, এটা উচ্চশিক্ষা সংসদের দশম বৈঠক। তাতে বিষয়বস্তু ছিল প্রথমত, CBCS সিস্টেম। তা কীভাবে চলছে, কোথাও অসুবিধা হচ্ছে কি না, কলেজগুলোর সঙ্গে সেটা নিয়ে আলোচনা করা ইত্যাদি। CBCS-এর টিউনিং করার দরকার আছে। আগামীদিনে অধ্যক্ষদের সঙ্গে উপাচার্যদের উপস্থিতিতে এবং যাঁরা CBCS সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন, তাঁদের প্রতিনিধিদের নিয়ে আমরা একটি সভা করে বিষয়টির ফের মূল্যায়ন করার চেষ্টা করব।
দ্বিতীয়ত, আমরা যে সমস্ত পদের অনুমোদন দিয়েছি সেই অনুমোদিত পদগুলির মধ্যে শিক্ষক-অশিক্ষক মিলিয়ে কত শূন্যপদ আছে তা সবকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে জানতে চেয়েছি। সেই শূন্যপদগুলি পূরণ করার জন্য বহুবার বলেছি ৷ আজকেও বলা হল। তাঁরা বলেছেন, শূন্যপদ অনেকটাই পূরণ হয়ে গেছে। আমি বলেছি, যেগুলো বাকি আছে সেগুলো করুন। না হলে নতুন করে পদ সৃষ্টি করার সম্ভাবনা কমে যাবে। কিন্তু মূল সমস্যাটা হলো সংরক্ষণ নীতি নিয়ে। এ জন্য প্রফেসর অর্থাৎ অধ্যাপক পদে লোক পাওয়া যাচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমি উপাচার্যদের অনুরোধ করেছি। “
আগামী বছর রাজ্যের প্রথম উচ্চশিক্ষা মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সে বিষয়েও আজ আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারে আগামী বছর ৩ ও ৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে এডুকেশন ফেয়ার। দেশের বাইরে থেকেও বিষয়ভিত্তিক বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আনার চেষ্টা করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধান অতিথি হিসাবে আমন্ত্রণ জানানো হবে। তিনি এই উচ্চশিক্ষা মেলার উদ্বোধন করবেন।
Be the first to comment