মাসানুর রহমানঃ-
কাঁচা সবজি থেকে শুরু করে চাল-ডাল মুদির সমস্ত দ্রব্যাদি, ফল, মাছ, মাংস, কাপড়, জুতো, এমনকি সেলুন দোকান, আইসক্রীম, ফুচকা, চা, কি নেই জলের উপর; শুধু আপনাকে হাজির হতে হবে পাটুলিতে। অনেকটা ব্যাংককের আদলে এবার খোদ কলকাতার পাটুলিতে ভাসমান বাজার চলছে রমরমিয়ে।
একটু ফ্ল্যাশব্যাকে গেলে আপনার মনে পড়বে ১৯৬৪ সালে ‘কাশ্মীর কি কলি’ সিনেমায় ডাল লেকের বাজার বোধ হয় বলিউডে আমরা প্রথম দেখতে পাই। কাশ্মীরের ডাল লেকের এই ভাসমান বাজার শতাব্দী প্রাচীন। সেখানে ভেসে বেড়াচ্ছে বহু হাউজবোট তাতে রয়েছে ভাসমান চায়ের দোকান, স্টেশনারি দোকানও।
পাটুলির ভাসমান বাজারের জন্য এই ঝিলে এসেছে মোট ১১৯টি নৌকা। জানা যায় নৌকাগুলো তৈরি হয়েছে হুগলি জেলার বলাগড়ে। পাটুলি ঝিলের মাঝ বরাবর তৈরি হয়েছে মূল ভাসমান বাজার এবং চলাচলের রাস্তাও। সেখান থেকে দু’দিকে ছ’টি করে মোট বারোটি শাখার মতো ছড়িয়ে গেছে চলাচলের জন্য। সেগুলোর কাছেই বাঁধা রয়েছে নৌকাগুলি। শাল কাঠের খুঁটির উপরে তৈরি হওয়া ভাসমান রাস্তাগুলোর দিয়ে হেঁটে বিভিন্ন নৌকায় পৌঁছে যেতে হবে আপনাকে। চওড়া রাস্তার ধারে দেওয়া হয়েছে রেলিং, সাদা আলোকবাতি। ঝিলের জলের ওঠানামা ভেবে তৈরি হয়েছে নৌকার নকশা। মাঝ বরাবর রয়েছে ঝরনা, ক্যাফেটেরিয়া, রয়েছে বসার জায়গাও।
সবকিছু মিলিয়ে এ এক অন্য বাজার যার চারিপাশের পরিবেশ এক অন্য জগতে নিয়ে যাবে আপনাকে একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়। সারাদিন মোটামুটি ক্রেতা থাকে, সন্ধ্যের পর বাড়তে থাকে লোকজনের ভিড়। শনি, রবিবার আরোও বাড়ে ক্রেতাদের ভিড়। রাতে কড়া নিরাপত্তা থাকে, ১১ টা বাজলে জল মার্কেটের গেটে লেগে যায় তালা। সারারাত থাকে গার্ড।
শহরের মধ্যে এ যেন এক অন্য শহর। যার অপূর্ব সৌন্দর্য্য সাজিয়ে গুছিয়ে ভাসিয়ে নিয়ে চলেছে তার এক পরম শান্তির পসরা; আর একরাশ মুগ্দ্ধতা।
চিত্রগ্রাহক – প্রশান্ত দাস
Be the first to comment