জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত। আনলক শুরু হওয়ার পর থেকে পেট্রল-ডিজেলের দাম সমানে বেড়ে চলেছে। টানা ১৭ দিন বাড়ার পর বুধবার পেট্রলের দাম অপরিবর্তিত ছিল। তবে রাশ টানা যায়নি ডিজেলের দামে। নাগাড়ে বেড়ে দিল্লিতে লিটারে পেট্রলের থেকে বেশি দামি হয়ে যায় ডিজেল। এর আগে এমন ঘটনা কখনও ঘটেনি। বৃহস্পতিবারও সেই ধারা চলছে। এই নিয়ে দ্বিতীয় দিন রাজধানীতে পেট্রলের থেকে লিটারে ডিজেলের দাম বেশি। টানা ১৯ দিন ঊর্ধ্বমুখী ডিজেলের দাম। এ দিন দু টি জ্বালানিরই দাম বেড়েছে।
মঙ্গলবার কলকাতায় লিটারপিছু পেট্রলের দাম ছিল ৮১.৪৫ টাকা। বুধবারও সেটাই অপরিবর্তিত ছিল। তবে ডিজেলের দাম বেড়ে হয় ৭৫.০৬ টাকা। তবে বৃহস্পতিবার শহরে লিটারে পেট্রলের দাম বেড়ে হয়েচে ৮১.৬১ টাকা। ডিজেল এক লিটার কিনতে লাগছে ৭৫.১৮ টাকা।
বুধবার দিল্লিতে পেট্রলের দাম ছিল লিটারপিছু ৭৯.৭৬ টাকা। ডিজেলের দাম তার থেকেও বেড়ে লিটারে ৭৯.৮৮ টাকা হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে। লিটারে ৮০ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে ডিজেলের দাম। রাজধানীতে এ দিন পেট্রলের দাম লিটারপিছু হয়েছে ৭৯.৯২ টাকা এবং লিটারপিছু ডিজেলের দাম হয়েছে ৮০.০২ টাকা।
চার মেট্রো শহরে বুধবার লিটারপিছু পেট্রল ও ডিজেলের দাম কী, তা দেখে নেওয়া যাক একনজরে…
শহর পেট্রলের দাম (লিটার) ডিজেলের দাম (লিটার)
কলকাতা ৮১.৬১, ৭৫.১৮
দিল্লি ৭৯.৯২, ৮০.০২
মুম্বই ৮৬.৭০, ৭৮.৩৪
চেন্নাই ৮৩.১৮, ৭৭.২৯
প্রথা অনুযায়ী দেশে সবসময়ই পেট্রলের থেকে দাম অনেকটাই কম থাকে ডিজেলের। দেশের অধিকাংশ জিনিসপত্র সরবরাহকারী ট্রাক চলে ডিজেলে। চলে বাস, ট্যাক্সি, ক্যাব। অনেকে তো আবার খরচ বাঁচাতে বেশি দাম দিয়ে ডিজেলচালিত গাড়ি কেনেন, যাতে মাসিক তেলের খরচটা নাগালের মধ্যেই থাকে। কিন্তু দিল্লির এই ডিজেলের দাম বৃদ্ধিতে চোখ কপালে উঠেছে আম জনতার।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বহু মানুষ। লকডাউনের বাজারে নাভিশ্বাস ওঠা জনগণের জন্য এই পরিস্থিতি মরার উপর খাঁড়ার ঘা বলেই মনে করছেন অনেকে। আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম এতটা কম থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে পেট্রল ও ডিজেলের দাম ক্রমে আকাশথছোঁয়া হয়ে চলেছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন দেশবাসী।
১৬ মার্চ থেকে টানা ৮২ দিন অপরিবর্তিত থাকার পর বেড়েছে পেট্রল-ডিজেলের দাম। লকডাউনের ধাক্কা কাটিয়ে অর্থনীতি যখন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করছে, সেই সময় পেট্রল-ডিজেলের, বিশেষ করে ডিজেলের দামে এত অল্প সময়ে এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পণ্য ও গণপরিবহণের খরচের মাধ্যমে সামগ্রিক মূল্যবৃদ্ধিতে ইন্ধন জোগাবে তা তাতে কোনও সন্দেহ নেই। ডিজেলের দাম বাড়ায় বেসরকারি বাসের মালিকরা ইতোমধ্যেই ভাড়া বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন।
তাঁদের দাবি, করোনা সংক্রমণের ভয় ও সরকারি নির্দেশের জেরে এমনিতেই কম সংখ্যক যাত্রী নিয়ে বাস চালাতে হচ্ছে। তার ওপর এত চড়া দরে ডিজেল কিনতে হলে, তাঁদের আরও লোকসান হবে। তাই মালিকরা দাবি জানিয়েছেন, ভাড়া বাড়ানো হোক। এর সঙ্গে রয়েছে উম্পুনের ধাক্কা। ঘূর্ণিঝড়ে বাজারে শাক-সব্জির দাম আকাশছোঁয়া। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মাছ-মাংসের দাম।
Be the first to comment