আইএসআইয়ের অঙ্গুলি হেলনেই নাকি খতম করা হয়েছে ৩ পুলিশকর্মীকে, উঠে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য!

Spread the love
হয় চাকরি ছাড়ো। নয়তো তোমাদের মেরে ফেলা হবে। এমনটাই হুমকি দেওয়া হয়েছিল কাশ্মীরের পুলিশকর্মীদের। কিন্তু ওঁরা চাকরি ছাড়েননি। আর তারই খেসারত দিতে হয়েছে নিজেদের জীবন দিয়ে। অপহরণের পরে তিন পুলিশকর্মীকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দিয়েছিল জঙ্গিরা। জানা গিয়েছে, এঁদের প্রত্যেকেই স্পেশাল পুলিশ অফিসার পদে নিযুক্ত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার ২০ সেপ্টেম্বর রাতে সোপিয়ান জেলায় কাপরেন ও বাটাগান্ড গ্রামে চার পুলিশ কর্মীর বাড়িতে হামলা চালায় জঙ্গিরা। তিন পুলিশকর্মীকে অপহরণ করা হয়। আরও এক পুলিশকর্মী গ্রামবাসীদের সাহায্যে জঙ্গিদের কবল থেকে মুক্ত হন বলে জানা গিয়েছে। ঘটনায় প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হয়েছে জঙ্গিগোষ্ঠী হিজবুল মুজাহিদিনকে।
এ বার প্রকাশ্যে এল আরও এক তথ্য। গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে খবর, পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের অঙ্গুলি হেলনেই নাকি খতম করা হয়েছে ওই তিন পুলিশকর্মীকে। সূত্রের খবর, কাশ্মীরে তিন পুলিশকর্মীর খুনের ঘটনায় তদন্তে নেমে বেশ কিছু ফোন কলের রেকর্ড হাতে এসেছিল তদন্তকারী দলের। আর সেই ফোন কল খতিয়ে দেখেই গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছে এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিল আইএসআই।
এ দিকে চলতি সপ্তাহেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসবেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। কিন্তু কাশ্মীরে তিন পুলিশকর্মীর খুনের ঘটনার পর পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনায় বসার ব্যাপারে সাফ না জানিয়ে দেয় ভারত সরকার। প্রথমত, পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গিরা কাশ্মীরে তিন পুলিশকর্মীকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করেছে। দ্বিতীয়ত, কাশ্মীরের প্রতি সংহতি জানানোর নাম করে হিজবুল জঙ্গি বুরহান ওয়ানির নামে ডাকটিকিট বার করেছে পাকিস্তান। আর এই দুই ঘটনায় স্বভাবতই পাক সরকারের প্রতি যথেষ্টই বিরক্ত ভারত। আর সেই জন্যেই বাতিল করা হয়েছে বৈঠক। পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার বলেন, পাকিস্তানের নয়া প্রধানমন্ত্রীর আসল রূপ প্রকাশ পেয়েছে।
অন্যদিকে পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি বৈঠক বাতিলের ঘটনায় জানিয়েছেন, ভারত সরকার কেবল একটা অজুহাত খুঁজছিল এই বৈঠক বাতিল করার। তিনি আরও বলেন, এই দ্বিপাক্ষিক আলোচনার ফলে দুই দেশেরই ভালো হতো। বহু সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে সমাধান করা সম্ভব হতো। প্রাথমিক ভাবে সম্মত হলেও তারপরে অজুহাত দেখিয়ে না বলে দিয়েছে ভারত সরকার। এটা ঠিক নয়।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার ২১ সেপ্টেম্বর কাশ্মীরের ওয়াঙ্গাম এলাকা থেকে উদ্ধার হয় ওই তিন পুলিশকর্মীর দেহ।জঙ্গিদের বুলেটে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিলেন নিসার আহমেদ ধোবি, ফিরদৌস আহমেদ ও কুলওয়ান্ত সিং-এই তিন স্পেশাল পুলিশ অফিসার। পুলিশ সূত্রে খবর, বেশ কিছুদিন ধরেই অপহৃত তিন পুলিশকর্মীকে হুমকি দিচ্ছিল জঙ্গিরা। বারবার চাকরি ছেড়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হচ্ছিল তাঁদের।
তিন পুলিশকর্মীর খুনের ঘটনার পরেই প্রাণের ভয়ে পুলিশের চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন অন্তত ছয় পুলিশকর্মী। এবং জঙ্গিদের কথামতো তাঁদের মধ্যে পদত্যাগের কথা ভিডিও করে অনলাইনে পোস্ট করে দিয়েছেন তাঁরা। কাশ্মীর পুলিশ গোটা ঘটনার তীব্র নিন্দা করে টুইট করেছে। আশঙ্কা, প্রাণের ভয়ে আরও বেশি সংখ্যক পুলিশকর্মী ইস্তফা দিতে পারেন।
এ দিকে বৈঠক বাতিল হওয়ায় বেজায় চটেছেন নয়া পাক প্রেসিডেন্ট ইমরান খান। কার্যত আঁতে ঘা লেগেছে তাঁর। আর নিজের বিরক্তি প্রকাশের জন্য তাই সোশ্যাল মিডিয়াকেই হাতিয়ার করেছেন ইমরান। টুইটারে তিনি লিখেছেন, “ভারতের উদ্ধত এবং নেতিবাচক মানসিকতায় আমি অত্যন্ত হতাশ।” তিনি আরও লিখেছেন, “আমি সারা জীবন ধরে এমন সব লোকের সংস্পর্শে এসেছি, যারা বড় বড় পদ দখল করে আছেন।ঙ্কিন্তু ওই পদে থাকতে হলে যে বিচক্ষণতা দরকার, তা তাঁদের নেই।” পরে অবশ্য বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশির সুরে সুর মিলিয়েই ইমরান বলেন, সমগ্র বিষয়টা দুঃখজনক। ভারত আমাদের প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া না দেওয়ায় আমরা আশাহত হয়েছি।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*