রোজদিন ডেস্ক :-
আরজিকর কান্ডের প্রতিবাদে একের পর এক শিল্পী সমাজসেবক এবং সমাজের বিশুদ্ধ ব্যক্তিরা তাদের পুরস্কার স্বীকৃতি ফিরিয়ে দিচ্ছেন। রাজ্যের চারুকলা পর্ষদের সদস্য পদ ছাড়েন সনাতন দিন্দা। সনাতন দিন্দার পর এবার সদস্যপদ ছাড়ছেন শিল্পী প্রদোষ পাল।
২০১১ থেকে প্রদোষ পাল চারুকলা পর্ষদের সদস্যপদ সামলেছেন। তবে এবার তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে রাজ্যের চারুকলা পর্ষদের সভাপতি শ্রী যোগেশ চৌধুরী কে চিঠি দিয়ে জানান যে তিনি আরজিকর কাণ্ডের প্রতিবাদে এই সদস্যপদ ছাড়তে চান। এটি তার প্রতিবাদের ভাষা।
শিল্পী প্রদোষ পাল নিজের ফেসবুক পাতায় নিজের পদত্যাগ পত্র শেয়ার করেন।
প্রদোষ পাল ফেসবুকের ক্যাপশানে লেখেন, ‘আজ অফিসিয়াল পদত্যাগ পত্র জমা দিলাম। প্রসঙ্গত কয়েকটি কথা না বললে নয়। চারকলা পর্ষদ সম্পর্কিত নানান কুৎসা দেখে বুঝেছি কিছুই না জেনে এক শ্রেণি কোনও বিদ্বেষ বা হিংসা থেকে কথাগুলো বলছে। দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার এরা সবাই আমার ঘনিষ্ঠ এবং চেনা জানা। সবাই সব জানার পরও সীমাহীন মিথ্যাচার ও কুৎসার বিরাম নেই। অভয়ার প্রতিবাদকে সামনে রেখে এই শ্রেণির উত্থান ভবিষ্যৎ সমাজ, বিশেষ করে শিল্প সমাজের পক্ষে খুবই বিপজ্জনক। আর যাই হোক এদের দ্বারা মানুষের কোনও মঙ্গল হওয়া সম্ভব নয়।’
প্রদোষ পাল আরও লেখেন, ‘সবাই জানেন চারুকলার সদস্য থেকেও আমি কতবার কতভাবে এই সরকারের অন্যায় নিয়ে সরব হয়েছি। যেজন্য আজ পর্যন্ত কেউ আমাকে বিন্দুমাত্র সাবধান করেনি। সভাপতি হিসেবে যোগেন চৌধুরী সাবধান করা তো দূরের কথা প্রতিবাদী বলে আমাকে বেশি পছন্দ করেন। প্রতিনিয়ত চোখে পড়ে ওঁকে নিয়ে কি পরিমান কুৎসা করে চলেছে কিছু মানুষ। জানি শিল্প নিয়ে এদের না আছে কোনো ধারণা, ত্যাগ এবং না আছে শিল্প চর্চার নিয়মিত অধ্যাবসায়। এই অর্ধ শিক্ষিতরাই সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ও ক্ষতিকারক।’
প্রদোষ পালের কথায়, ‘আমি এমনটা একেবারেই মনে করিনা। ভেতরে যাদের ময়লা আর যাই হোক তাদের দ্বারা ময়লা পরিষ্কার হয়না। সে পরিষ্কারে কোনো কাজ হয়না! আগেও বলেছি আবার বলছি আর যাই হোক এদের জাস্টিস চাওয়ার কোনও অধিকার নেই। রাজনৈতিক ভণ্ডদের মতো এরা আর এক ধরনের ভণ্ড। সংখ্যায় কম হোক কিন্তু পরিষ্কার মানুষরা এগিয়ে আসুক চাই।’
এদিকে প্রদোষ পাল যে চিঠির বয়ান শেয়ার করেছেন, তাতে রাজ্য চারুকলা পর্ষদের সভাপতি যোগেন চৌধুরীর উদ্দেশ্যে তিনি লিখেছেন, ‘সাম্প্রতিক আর জি কর হাসপাতালের ঘটনাকে কেন্দ্র করে অগণিত মানুষের মতো আমার মনও ভালো নেই। সমাজ সচেতন মানুষ হিসেবে আমিও পারি না এর থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন রাখতে। এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ তথা বিশ্বের অগণিত মানুষের যা দাবি, আমার দাবি একই, ঘটনার প্রকৃত সত্য প্রকাশ্যে আসুক, নেপথ্যের দোষীরা যথোপযুক্ত শাস্তি পাক। স্বাভাবিকভাবেই এমতাবস্থায় এই সরকারের কোনও পর্ষদের সঙ্গে আমার নাম যুক্ত থাকুক চাই না। আমার একান্ত অনুরোধ, রাজ্য চারুকলা পর্ষদের সদস্য পদ থেকে আমার নামটি বাদ দেওয়া হোক। আজ থেকে এই বিভাগের কোনও সদস্য পদে থাকতে চাই না। আমার আবেদন মঞ্জুর হলে বাধিত থাকব।’
Be the first to comment