উন্নাও কাণ্ডে প্রাক্তন জোটসঙ্গীকে রেয়াত! যোগীকে আইন-শৃঙ্খলার কথা না বলার পরামর্শ প্রিয়াঙ্কার

Spread the love

বিধানসভা নির্বাচন শুরু হতে না হতেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। বৃহস্পতিবারই উত্তর প্রদেশের উন্নাওয়ে প্রাক্তন মন্ত্রী তথা প্রয়াত সমাজবাদী পার্টির নেতা ফতেহ বাহাদুর সিংয়ের পুত্র রাজোল সিংয়ের জমি থেকে উদ্ধার হয় দুই মাস আগে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া এক দলিত তরুণীর দেহ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই রাজনীতির পারদ চড়েছে। বহুজন সমাজ পার্টি থেকে শুরু করে শাসক দল বিজেপি, সকলেই নিশানা করেছেন সমাজবাদী পার্টি ও দলের প্রধান অখিলেশ যাদবকে। তবে অন্য পথে হাঁটল কংগ্রেস। প্রাক্তন জোটসঙ্গীকে আক্রমণ না করে বরং শাসক দলকেই রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা প্রসঙ্গে আক্রমণ করলেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। এদিন তিনি সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের দিকেই প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন। জানতে চান, দু’মাস আগে এফআইআর দায়ের হওয়া সত্ত্বেও আগে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি কেন?

উন্নাওয়ে দলিত তরুণীর পচাগলা দেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করেই সকলে যখন সমাজবাদী পার্টির দিকে আঙুল তুলেছেন, তাদের শাসনকালে ‘গুণ্ডারাজ’-র প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন, সেখানেই এদিন সকালে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী টুইট করে যোগী সরকারকেই আক্রমণ করেন। তিনি লেখেন, “উন্নাওয়ে যা ঘটেছে, তা উত্তর প্রদেশে নতুন নয়। একজন দলিত মা তাঁর মেয়ের জন্য দরজায় দরজায় ঘুরলেন এবং শেষ অবধি তাঁর মেয়ের মৃতদেহ পেলেন। প্রশাসন তাঁর কথা শোনেনি। বরং এই ইস্যু নিয়ে রাজনীতি করছে। বিজেপির উত্তর দেওয়া উচিত যে তাদের প্রশাসন কেন জানুয়ারি মাসেই ওই মায়ের কথা শোনেনি?”

এখানেই থামেননি প্রিয়াঙ্কা। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকেও আক্রমণ করে তিনি বলেন, “যোগীজী, আপনার বক্তৃতায় রাজ্যের আইন শৃঙ্খলার কথা বলা বন্ধ করা উচিত। আপনার প্রশাসনের অধীনেই একজন মহিলাকে সুবিচার পাওয়ার জন্য লড়াই করতে হচ্ছে। যখন তাদের উপর অত্যাচার হয়, খুন করা হয়, তখন কেউ তাদের কথা শোনে না। মহিলারা অত্যাচারিত হচ্ছেন, এদিকে আপনি মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিতেই ব্যস্ত।”

বৃহস্পতিবারই ২২ বছরের ওই তরুণীর দেহ উদ্ধার করা হয় উন্নাওয়ের একটি বদ্ধ জমি থেকে। ওই জমির মালিক রাজ্য়ের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা প্রয়াত সমাজবাদী পার্টির নেতা ফতেহ বাহাদুর সিংয়ের ছেলে রাজোল সিং। মৃতার মায়ের অভিযোগ, গত ডিসেম্বরেই ওই তরুণী নিখোঁজ হয়ে যায়। ৮ ডিসেম্বর তিনি নিখোঁজ ডায়েরিও করেন। এরপর তিনি পুলিশ প্রশাসনের দরজয় ঘুরলেও কোনও সদুত্তর পাননি।  বৃহস্পতিবার যখন তাঁর মেয়ের দেহ উদ্ধার হয়, তখন দেহটি প্রায় পচে গলে গিয়েছে।

ওই মহিলার দাবি, তিনি আগেই পুলিশকে জানিয়ে ছিলেন যে তাঁর মেয়ের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পিছনে রাজোল সিংয়ের ছেলে জড়িত রয়েছে, কিন্তু সেই সময় কেউ তাঁর কথা শোনেননি। গত ২৪ জানুয়ারি তিনি লখনউয়ে অখিলেশ যাদবের গাড়ির সামনে ঝাঁপ দিয়ে পথ আটকানোর চেষ্টা করেছিলেন।

বৃহস্পতিবার সদর কোতওয়ালি পুলিশের এসডব্লুএটি দল উন্নাওয়ের ওই ঘটনাস্থলে যায়। মাটি খুঁড়ে চার মিটার গভীর থেকে ওই তরুণীর দেহ উদ্ধার করা হয়। জানা গিয়েছে, একটি কম্বলে মুড়িয়ে তাঁর দেহ সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। ময়নাতদন্তে জানা গিয়েছে, তাঁকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর ঘাড় ভেঙে যাওয়ার তথ্যও জানা গিয়েছে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*