শ্যুটিং শুরু হোক যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। তারপর আলোচনা চলতে পারে রাত অবধি। মঙ্গলবার, নজরুল মঞ্চে আর্টিস্ট ফোরামের বৈঠকের পর এই ভাবেই প্রযোজকদের কাছে আর্জি জানালেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়।
প্রযোজক এবং আর্টিস্ট ফোরামের মতানৈক্যে গত চারদিন ধরে বন্ধ সব সিরিয়ালের শ্যুটিং। নতুন এপিসোড না থাকায় ইতিমধ্যেই পুরনো এপিসোড সম্প্রচার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেশ কিছু চ্যানেল কর্তৃপক্ষ। নির্ধারিত টাইম স্লট বদল করে, অন্য অনুষ্ঠান দিয়ে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করছেন কেউ কেউ।
অচলাবস্থা কাটাতে নজরুল মঞ্চে বৈঠকে এসেছিলেন টলিউডের অভিনেতারা। কিন্তু তাঁদের কথাতেই স্পষ্ট, এখনও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি।
দীর্ঘদিন ধরেই সিরিয়ালের শ্যুটিং নিয়ে ক্ষোভ জমছে অভিনেতা ও কলাকুশলীদের মধ্যে। নির্ধারিত শিফটের ১০ ঘণ্টার সময় সীমা পেরিয়ে অনেক সময়েই সিরিয়ালের শ্যুটিং চলছে ষোল সতেরো ঘণ্টা। কিন্তু তারপরেও অভিনেতা ও কলাকুশলীদের অভিযোগ, নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে বেতন পাচ্ছেন না তাঁরা। বরং দীর্ঘ দিন ধরে প্রযোজকরা আটকে রাখছেন প্রাপ্য টাকা।
অভিনেতাদের দাবি, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের নেতৃত্বে ৭ জুলাই প্রযোজকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিল অভিনেতা ও কলাকুশলীদের সংগঠনগুলো। সেইদিনই স্থির হয়েছিল, গত জুন অবধি সমস্ত বকেয়া বেতন মিটিয়ে দেওয়ার কথা। বলা হয়েছিল এই মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে দিয়ে দিতে হবে সেই বকেয়া। বেশিরভাগ প্রযোজকরা এই দাবি মেনে নিলেও, বেশ কয়েকজন মানেননি এই দাবি।
প্রযোজকদের একাংশ অবশ্য দাবি করছেন যে বৈঠক হলেও সই করা হয়নি কোনও সমঝোতার চুক্তি। কিন্তু অভিনেতাদের দাবি, মউ সই না হলেও, সেদিনের বৈঠকের-এর সমস্ত কথাই লিপিবদ্ধ আছে মিটিং-এর মিনিটসে। সেই মিনিটস অগ্রাহ্য করতে পারেন না প্রযোজকরা।
অভিনেতারা আরও জানাচ্ছেন, শ্যুটিং বন্ধ করার সিদ্ধান্ত তাঁরা নেননি। বরং বকয়া মেটাতে রাজি না হওয়া প্রযোজকরাই বন্ধ করে রেখেছেন শ্যুটিং। তবে নির্ধারিত দিনে মধ্যে বেতন পাওয়ার দাবিতে তাঁরা এখনও অনড়। তবে এখন অবধি কোনও সাড়া মেলেনি প্রযোজকদের পক্ষে।
এমনিতেও হাল খারাপ বাংলা ইন্ডাস্ট্রির। কলাকুশলীদের অনেকেই নিয়মিত কাজ পান না। অভিনেতা ও কলাকুশলীদের অনেকেই রুজিরোজগারের জন্য নির্ভরশীল সিরিয়ালের ওপর। এমন অবস্থায় সেই টাকাও নিয়মিত না পাওয়ায় জমছে ক্ষোভ।
এখন দেখার কতদিনে কাটে এই অচলাবস্থা। আবার কবে বাংলা টেলিভিশনের দর্শকরা দেখতে পাবেন তাঁদের প্রিয় সিরিয়াল।
Be the first to comment