
রোজদিন ডেস্ক, কলকাতা:- রাত পেরিয়ে সকাল হয়েছে। চাকরিহারারা অবস্থান থেকে সরেননি। এখনও এসএসসি ভবনের সামনের রাস্তায় খোলা আকাশের নীচে পানীয় জল, শৌচাগার ছাড়াই বসে রয়েছেন তাঁরা। ঠিক তেমনই মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ডিরোজিও ভবনের সামনে ধর্নায় বসেছেন চাকরিহারা অশিক্ষক কর্মীরা। এমন পরিস্থিতিতে আচার্য সদনের ভিতরে আটকে এসএসসির চেয়ারম্যান। সোমবার রাতে খাবার ভিতরে নিয়ে যাওয়ার আগেই তা রাস্তায় ফেলে নষ্ট করে দেন বিক্ষোভকারীরা। মঙ্গলবার সকালেও চা নিয়ে যাওয়ার সময় বাধা দেন বিক্ষোভকারী শিক্ষক-শিক্ষিকারা। বিক্ষোভ জারি এসএসসি ভবনের সামনে। এদিকে চাকরিহারা শিক্ষকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা।
আচমকা চাকরিহারা হওয়ার পর থেকে কেটেছে বহু নির্ঘুম রাত। ‘যোগ্যতা’র ভিত্তিতে পাওয়া শিক্ষকতার চাকরিতে হঠাৎ অনিশ্চয়তা। নিয়োগ দুর্নীতির জাঁতাকলে পড়ে যেন দুর্ভাগ্যতাড়িত হয়েছেন তাঁরা। ‘যোগ্য-অযোগ্যে’র ফারাক করতে অক্ষম স্কুল সার্ভিস কমিশনের উপর ভরসা হারিয়ে সুপ্রিম কোর্ট ২০১৬ সালের নিয়োগ প্যানেল বাতিল করেছে। কর্মহীন রাজ্যের ২৫ হাজার ৭৫২ শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী। এসএসসি তবু ভরসা দিয়েছিল, কারা যোগ্য, কারাই বা অযোগ্য, তা তালিকা প্রকাশ করে পৃথকীকরণ করা হবে। তার দিনও ধার্য হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীও বারবার আশ্বাস দিয়েছেন, ‘যোগ্য’রা বঞ্চিত হবেন না, তাঁদের পাশে রয়েছে সরকার। কিন্তু, শুধু মৌখিক আশ্বাস বা প্রতিশ্রুতিতে কাজ হল না, তা আরও একবার প্রমাণিত হয়েছে সোমবার। ‘যোগ্য-অযোগ্যে’র কোনও তালিকাই প্রকাশিত হয়নি। আর কথা দিয়ে কথা না রাখায় এসএসসি আর মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ভবনের সামনে রাতভর ধরনায় বসে রইলেন ‘যোগ্য’ শিক্ষকরা। ভুখা পেটে সকালেও চলছে একরোখা প্রতিবাদ। তাঁদের ঘেরাওয়ের মাঝে পড়ে নিজেদের দপ্তরে ‘বন্দি’ এসএসসি এবং পর্ষদের আধিকারিকরাও। শোনা যাচ্ছে, সকালে ডিরোজিও ভবন ও আচার্য সদনে চা নিয়ে যেতেও বাধা দেওয়া হয়েছে প্রতিবাদীদের তরফে। যুক্তি একটাই, তাঁদের পেটের ভাত জোগানোর রাস্তা প্রায় বন্ধ হয়েছে, অভুক্ত থেকে তাঁদের জ্বালা বুঝুন অপর পক্ষ।
Be the first to comment