এ যেন হুবহু রবিনসন স্ট্রিট ৷ সেখানেও দিদি দেবযানী আর প্রিয় পোষ্যদের দেহ আগলে বসেছিলেন পার্থ দে ৷ এবার সেই ছায়া বিধাননগরের বিই ব্লকে ৷ পুলিশ সূত্রে খবর, সাত দিন আগে মারা গিয়েছেন মা ৷ কিন্তু মা’য়ের দেহ সৎকার না করে রেখে দিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি ৷ সল্টলেকের ওই বাড়িতে সাত দিন ধরে মা’কে রেখে দেন ছেলে ৷
কিছুদিন পর প্রতিবেশীরা দুর্গন্ধ পেয়ে খবর দেন পুলিশে ৷ গতকাল রাতেই পুলিশ এসে মৃত মায়ের পচা-গলা দেহ উদ্ধার করে ৷ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ছেলেকে আটক করেছে পুলিশ ৷
পুলিশ সূত্রে খবর, এই ব্লকের একটি বাড়িতে থাকতেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা কৃষ্ণা ভট্টাচার্য ও তাঁর ছেলে। স্বামী গৌরব ভট্টাচার্য ছিলেন এসএসকেএম হাসপাতালের চিকিৎসক। কয়েক বছর আগে আগুনে পুড়ে মারা যান তিনি।
পুলিশি জেরায় ওই যুবক জানান, সাতদিন আগে তাঁর মায়ের মৃত্যু হয়েছে। যুবক দাবি করেছেন, তাঁর মা তাঁকে বলে গিয়েছিলেন, বাড়ির মধ্যেই মৃতদেহ সমাধিস্থ করতে। কিন্তু ডাক্তার এসে পরীক্ষা করে বলেন, প্রায় ১৮ দিন আগে মৃত্যু হয়েছে কৃষ্ণা ভট্টাচার্যের। মায়ের মৃত্যুর পর কাউকে এই খবর জানাননি কেন তাঁর ছেলে? পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় অবশ্য ওই যুবক বলেছেন, তিনি বাবার এক বন্ধুকে ফোন করে বলেছিলেন। বাবার বন্ধুকেও জেরা করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
তবে বাড়ির ভিতরে বেশ কিছু জিনিস দেখে চোখ কপালে উঠেছে পুলিশের। পুলিশ সূত্রে খবর, বাড়ির বাইরের দেওয়ালে বহু শংসাপত্র, রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড সেলোটেপ এবং আঠা দিয়ে আটকানো রয়েছে। বেশিরভাগই কৃষ্ণা ভট্টাচার্যের। একটি শংসাপত্র কৃষ্ণা এবং তাঁর স্বামী গৌরব ভট্টাচার্যের। কিন্তু সেখানে বাবার নাম কেটে মায়ের নামের পাশে প্রয়াত লিখেছিলেন যুবক। তারপর সেটাও কেটে সেখানে ‘মহারানি এলিজাবেথ’ লিখে দেন। বাড়িতে রান্নার কোনও সরঞ্জাম মেলেনি। এমনকী বাইরে থেকেও খাবার আনানো হত না। তবে স্যান্ডউইচ, বার্গারজাতীয় কিছু শুকনো খাবার পাওয়া গিয়েছে।
Be the first to comment