শুধুমাত্র সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য নাকি তিনি এসেছেন। শনিবার রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে এমনটাই দাবি করলেন বিজেপি নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সেখানে বিজেপির ‘গোঁড়া সাম্প্রদায়িকতা’, ‘বিভেদমূলক নীতি’ রাজনীতির বিরোধিতাও করলেন তিনি। তবে এদিন রাজীব সাফ জানালেন কুণালের সঙ্গে সাক্ষাতের সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক সম্পর্ক নেই। নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত থাকায় আনেক দিন দেখা হয়নি, তাই দেখা করতে এসেছেন। কিন্তু সূত্র বলছে, রাজীবেরও ঘাসফুলে ফিরতে আর খুব বেশি দেরি নেই।
উল্লেখ্য, শনিবার বিকেলে আচমকাই কুণাল ঘোষের সুকিয়া স্ট্রিটের বাড়িতে যান রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন ঘরে তালা লাগিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা ভিতরে চলে বৈঠক। বাইরে সংবাদমাধ্যমের ভিড় দেখে কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে আসেন কুণাল ঘোষ। তিনি জানান, এক আত্মীয়কে দেখতে ওই এলাকায় এসেছিলেন রাজীব। সেখান থেকেই ফোনে জানতে চান কুণাল বাড়িতে আছে কিনা। এরপরই তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেন রাজীব। এতে কোনও রাজনৈতিক স্বার্থ নেই বলেই মন্তব্য করেন কুণাল। এরপরই রাজীবকে সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে আসেন কুণাল। রাজীবের মুখেও বারবার ‘সৌজন্য সাক্ষাতের ব্যাখ্যাই শোনা গেল এ দিন। রাজীব জানালেন এক কাপ চা খেতেই কুণালের বাড়িতে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু মুকুলের দলবদলের পরের দিনটাকেই কেন চা খাওয়ার জন্য বেছে নিতে হল রাজীবকে? সেই প্রশ্ন রয়েই যাচ্ছে।
কিন্তু মুকুল রায়ের তৃণমূলের প্রত্যাবর্তনের মধ্যে কুণালের সঙ্গে দেখা করা কি স্রেফ সৌজন্য সাক্ষাৎ? তাও কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা ছাড়া ও অন্যের গাড়িতে এসেছিলেন? তাও সেই বৈঠক চলেছে প্রায় দেড় ঘণ্টা? রাজীবের সাফাই, কুণালের সঙ্গে তো দেখা করেছেন ‘সহকর্মী’ তথা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়।
যদিও সম্প্রতি নিজের ফেসবুক পোস্ট নিয়ে অনড় থেকেছেন রাজীব। এদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রাজীব বলেন, ‘বিপুল জনসমর্থন নিয়ে আসা একটা সরকারের মাত্র এক মাস হয়েছে। এই অবস্থায় ৩৫৬ ধারার জুজু দেখানো কিংবা বিভাজনের রাজনীতি করার আমি বিরোধী। আমি গোঁড়া সাম্প্রদায়িকতার বিরোধী। আর সে কথা দলকেও জানিয়েছি। অর্থাৎ দলের কিছু অবস্থান নিয়ে যে তাঁর মত পার্থক্য রয়েছে, তা স্বীকার করলেন রাজীব।
দিনকয়েক আগেই রাজ্য সরকারের ‘পাশে’ থাকার বার্তা দিয়েছিলেন রাজীব। বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন নিয়ে বিজেপি যখন সুর চড়াচ্ছে, সেই সময় ফেসবুক পোস্টে রাজীব লেখেন, ‘সমালোচনা তো অনেক হল। মানুষের বিপুল জনসমর্থন নিয়ে আসা নির্বাচিত সরকারের সমালোচনা ও মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধিতা কতে গিয়ে কথায় কথায় দিল্লি, আর ৩৫৬ ধারার জুজু দেখালে বাংলার মানুষ ভালোভাবে নেবেন না। আমাদের সকলের উচিত, রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে কোভিড ও ইয়াস – এই দুই দুর্যোগে বিপর্যস্ত বাংলার মানুষের পাশে থাকা।’
সেইসঙ্গে সম্প্রতি হেস্টিংসে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ডাকা রাজ্যস্তরের নেতাদের বৈঠকে ছিলেন না রাজীব। ভোটে হারের পর থেকেই বিজেপির কর্মসূচিতে তেমন দেখা মিলছিল না। তার ফলে স্বভাবতই তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়।
Be the first to comment