কোরোনার থেকেও বেশি গতিতে কাজ চলছে। আমরা সবসময় প্রস্তুত রয়েছি। শনিবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে একথাই জানালেন রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা। দিন কয়েক আগেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, আগামীদিনে সংক্রমণ আরও বাড়বে ৷ তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই ৷ আজ সেই একই সুর শোনা গেল মুখ্যসচিবের গলায়।
কোরোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কোথাও যেন অনেকটাই আত্মবিশ্বাসী তিনি। তাঁর কথায়, আগামী তিন-চার সপ্তাহে রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে। তবে আতঙ্কের কোনও কারণ নেই। সংক্রমণের থেকে বেশি গতিতে কাজ করছি আমরা। কোরোনার থেকে বেশি গতি আমাদের। আমরা প্রস্তুত রয়েছি। সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে। অনেক বেসরকারি সংস্থাও আমাদের সঙ্গে একযোগে কাজ করছে। তাই বলছি, আগামী তিন-চার সপ্তাহে কোনও সমস্যা হবে না।
কোরোনা মোকাবিলায় রাজ্যে পরিকাঠামো দিন দিন আরও মজবুত হয়ে উঠছে। সমস্ত ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। আজ একথা জানান রাজীব সিনহা। তাঁর বক্তব্য, “আমাদের 24×7 টেলি সার্ভিস রয়েছে। পাশপাশি কোভিড ম্যানেজমেন্ট টিম, ডাটা অ্যানালিসিস টিম, কোভিড বেরিয়ারস ক্লাবও একসঙ্গে লড়াই করছে। এই কোভিড বেরিয়ারস ক্লাব দেখছেন মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়।
বর্তমানে এই ক্লাবে ৭০০ জন সদস্য রয়েছে, যাঁরা কোরোনা পরিস্থিতিতে কাজ করছে।তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতির পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, এই মুহূর্তে সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি শহর ও শহরতলি এলাকায়। তাই কলকাতা, দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলিকে একটি ইউনিট হিসেবে দেখা হচ্ছে। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে কলকাতার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার দায়িত্বে রয়েছেন মনোজ পাল।
রাজ্যে ক্রমবর্ধমান কোরোনা সংক্রমণ প্রসঙ্গে মুখ্যসচিব বলেন, “WHO যে পরিমাণ টেস্টিংয়ের কথা বলছে , তার থেকে বেশি টেস্টিং হয়েছে। আমরা এখন যে পরিমাণ টেস্ট করছি, একমাসের মধ্যে তা আরও বাড়ানো হবে। যত টেস্টিং হবে, তত কেস বেরোবে। তাই একটা আতঙ্কের কারণ রয়েছে। তবে বিষয়টিকে বিস্তারিতভাবে জানুন। সবকিছু খতিয়ে দেখুন। ভয় পাওয়ার কারণ নেই। প্রয়োজনে বৃহত্তর ক্ষেত্রে ছবিটা দেখুন। পশ্চিমবঙ্গের এত বড় ১০ কোটি জনসংখ্যায় ১৯০০ জন রয়েছেন, যাঁরা গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসাধীন।
পাশাপাশি নতুন করে টোল ফ্রি নম্বর চালু করা হয়েছে। এবিষয়ে মুখ্যসচিব বলেন, হোম আইসোলেশন সার্ভিসের জন্য টোল ফ্রি নম্বর চালু করা হয়েছে। নম্বরটি হল ১৮০০৩১৩৪৪৪২২২। পাশপাশি সেফ হোম টিম রয়েছে। সৌমিত্র মোহন এই টিমকে দেখছেন। সমস্ত ব্যবস্থা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই সবকিছুর পাশাপাশি মৃতদেহগুলির শেষকৃত্য ও সঠিক ব্যবস্থা করার জন্য বিনোদ কুমারকে নিয়ে একটি টিম গঠন করা হয়েছে।
তবে লকডাউন নিয়ে আপাতত কোনও পরিকল্পনা নেই রাজ্যের। এবিষয়ে মুখ্যসচিব বলেন, কনটেইনমন্ট জ়োনে লকডাউন থাকবে। কড়া নজরদারি চলবে। তবে আপাতত রাজ্যে পুরো লকডাউন বা নতুন করে কোনও লকডাউন জারি করা হবে না।
মুখ্যমন্ত্রীর সেদিনের বক্তব্যের মতো আজ খানিকটা একই সুরে কথা বললেন রাজীব সিনহা। তবে যে হারে সংক্রমণ ক্রমবর্ধমান। ক্রমহ্রাসমান সুস্থতার হার। তাতে কোথাও যেন প্রশ্নচিহ্ন থেকে যাচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
Be the first to comment