অশনি সঙ্কেত শোনালেন নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান রাজীব কুমার। আর্থিক ক্ষেত্রে গত ৭০ বছরে এমন সঙ্কটজনক পরিস্থিতি আসেনি বলেও কটাক্ষ তাঁর । কেবল মাত্র কটাক্ষ করেই থেমে থাকেননি রাজীব কুমার ৷ তাঁর আশঙ্কা, এই কঠিন পরিস্থিতি থেকে দ্রুত বেরিয়ে আসতে না পারলে অচিরেই ভেঙে পড়বে দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড ৷
উল্লেখ্য, নরেন্দ্র মোদীর অন্যতম প্রধান প্রতিশ্রুতি ছিল, দ্বিতীয় UPA জমানায় মন্দাক্রান্ত অর্থনীতির পুনরুজ্জীবন ঘটাবেন তাঁরা। বাস্তব পরিস্থিতি কী? গত ডিসেম্বরে নীতি আয়োগ রীতিমতো অভূতপূর্ব ভাবেই, CSO-র ‘সংশোধিত তথ্য’ প্রকাশ করে। দেখা যায়, এর আগে GDP বৃদ্ধির যে হার পাওয়া গেছিল, সংশোধিত হিসাবে আয় বৃদ্ধির হার তার চেয়ে বেশি ৭.৩ শতাংশ। ভোট আরও কাছে এল, ৩১ জানুয়ারি CSO নতুন সংশোধিত হিসাব প্রকাশ করল। দেখা গেল, GDP বৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৭.৭ শতাংশ! অথচ বিশ্বব্যাঙ্কের ওয়ার্ল্ড ডেভেলপমেন্ট ইন্ডিকেটরস-এর সাম্প্রতিকতম সংস্করণ অনুসারে, গত ১৫ বছরের মধ্যে মাত্র পাঁচটি বছরে ভারতের GDP বৃদ্ধির হার ৭ শতাংশ ছাড়িয়েছে এবং সাম্প্রতিক অতীতে তিন বার ভারতের GDP বৃদ্ধির হার ৭ শতাংশের নীচে নেমেছে।
শুধু আর্থিক ক্ষেত্রেই নয় ৷ হিসাব বলছে সমস্যা বেড়েছে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও ৷ অধিকাংশ মানুষের জীবনে মূল সমস্যা হল জীবিকার সংস্থান। মোদীর প্রতিশ্রুতি ছিল, তিনি ক্ষমতা পেলে দশ বছরে পঁচিশ কোটি চাকরি হবে। মানে, বছরে গড়ে আড়াই কোটি। গৃহস্থালির সমীক্ষার ভিত্তিতে CMIE ২০১৬ সাল থেকে কর্মসংস্থানের যে হিসাব কষছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, ২০১৭ সালে দেশে মোট কর্মীর সংখ্যা ছিল ৪০ কোটি ৬৭ লাখ । ২০১৮ সালে সেটা কমে দাঁড়ায় ৪০ কোটি ৬২ লাখ। ২০১৯-এর ফেব্রুয়ারিতে তা ৪০ কোটিতে ঠেকেছে । ২০১৭ সালে নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে ১৮ লাখ, কিন্তু এটা সেই বছ-রের নতুন কর্মপ্রার্থীর সংখ্যার ১২ শতাংশ, আর মোদী বছরে যে আড়াই কোটি নতুন কাজ দেওয়ার কথা বলেছিলেন, তার ৭ শতাংশ!
এই পরিসংখ্যানের নিরিখেই কুমারের বিশ্লেষণ, অটোমো–বাইল সেক্টর ধুঁকছে। বহু কর্মী ছাঁটাই করে বা ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে অধিকাংশ সংস্থা। উৎপাদন ক্ষেত্রে ভাটা। নতুন কোনও শিল্প বা বিনিয়োগের রাস্তা তৈরি করা যাচ্ছে না । আদপে তার চেয়েও বেশি সংকট ফাইনান্সিয়াল সেক্টরে অর্থাৎ আর্থিক শিল্পক্ষেত্রে ।
Be the first to comment