রাজস্থান সব অর্থেই রাজকীয়। গোটা রাজ্য জুড়েই রাজগরিমার প্রাচুর্য্য। মাথা উঁচু করে চলা, হার না মানা, রাজপুত দৃঢ়তা। এর পাশাপাশি পাহাড়, নদী, মরুভূমি, রাজপ্রাসাদ কি নেই এখানে। দুটি প্রসিদ্ধ ধর্মস্থানও আছে রাজস্থানে। একটি পুষ্কর এবং অন্যটি আজমেঢ় শরিফ।
পুষ্কর –
পুষ্কর আজমেঢ় জেলার একটি শহর। এখানে হিন্দু ও শিখদের ধর্মস্থান হিসাবে প্রসিদ্ধ। অনেক আগে থেকেই এখানে মন্দির ছিল কিন্তু পরে সেটি ধ্বংস হয়ে যায়। ১৮০০ শতকের পরবর্তী পর্যায়ে এটিকে পুনর্নির্মাণ করা হয়। পুষ্করে ব্রহ্মা মন্দিরের টানে বহু তীর্থযাত্রী আসেন এখানে। কার্ত্তিক পূর্ণিমায় ৭দিন ধরে চলে পুষ্কর মেলা। সেই সময়ও বহু দেশ বিদেশের ভক্ত সমাগম হয়। পুষ্কর শব্দের অর্থ হলো নীল পদ্ম। পুষ্কর লেকের পাশেই এই ব্রহ্মা মন্দিরটি অবস্থিত। এই শহরে ডিম এবং মাংস ভোজন নিষিদ্ধ। তা সত্ত্বেও প্রতিদিন অজস্র তীর্থযাত্রী যার মধ্যে বেশিরভাগই বিদেশী এখানে আসে শান্তির খোঁজে। এখানে একটি শিখদের গুরুদোয়ারা আছে। গুরু নানক ও গুরু গোবিন্দ সিং এর গুরুদোয়ারা নামে পরিচিত। গুরুমুখী শিখদের ধর্মস্থান এটি।
আজমেঢ় শরিফ-
মৈণুদ্দিন চিস্তির দরগা এটি। আজমেঢ় রেলওয়ে স্টেশন থেকে দু কিমি দূরে অবস্থিত এই আজমেঢ় শরিফ দরগা। তারাগড় পর্বতের পাদদেশে এই দরগায় জাতিধর্ম নির্বিশেষে লক্ষ লক্ষ মানুষ আসেন। কথিত আছে আকবর ও তাঁর রাণী প্রতিবছর আগ্রা থেকে পায়ে হেঁটে আসতেন এখানে (পুত্রের কামনায়)। এই ধর্মস্থানটি ভারত সরকারের অধীনে। মুসলিম ধর্মস্থান হওয়া সত্বেও বিভিন্ন ধর্মের প্রায় ১৫০০০ তীর্থযাত্রী রোজ আসেন এখানে। এর মূল দরজাকে বলে নিজাম গেট। তাছাড়া শাহজাহান গেট, বুলন দরয়াজা প্রভৃতির স্থাপত্য, ভাস্কর্য দর্শনীয়। এখানে মৈণুদ্দিন চিস্তির উরস হয় প্রতিবছর ষষ্ঠ অথবা সপ্তম রাজাবে (রমজান মাসে)। কথিত আছে এই দরগার চামড় মাথায় দিলে কামনা সিদ্ধি হয়। অনেকে এই দরগায় নতুন কাপড়ও উৎসর্গ করেন। এইভাবেই আজমেঢ় শরিফ জাতিধর্ম নির্বিশেষে বহু মানুষের সমস্যার সমাধানে একটি আদর্শ ধর্মস্থান হিসাবে বিবেচিত হয়।
তথ্য সংগ্রহে – পিয়ালি আচার্য
Be the first to comment