চিরন্তন ব্যানার্জি:-
গত মঙ্গলবার অর্থাৎ ৩ সেপ্টেম্বর রাজ্য বিধানসভায় পাশ হয় ধর্ষণ-বিরোধী বিল ‘দ্য অপরাজিতা উইমেন অ্যান্ড চাইল্ড (ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্রিমিনাল ল অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল ২০২৪’। নিয়ম মেনেই বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল গিয়েছে রাজভবনে রাজ্যপালের সইয়ের জন্য। কিন্তু সেখানেই বাঁধে বিপত্তি। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস জানিয়ে দেন বিলের সাথে প্রয়োজনীয় ‘টেকনিক্যাল রিপোর্ট’ জমা দেয় নি রাজ্য। যেটি না থাকলে কোনো বিলেই রাজ্যপাল সম্মতি দিয়ে সই করতে পারে না।
পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী রাজভবনের অভিযোগ, যে কোনও বিল রাজ্য বিধানসভায় পাশ হওয়ার পরেই বাংলার সরকার এই আচরণ করে। যা নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল। অর্থাৎ, কোনও বিলের ক্ষেত্রেই ওই প্রয়োজনীয় রিপোর্টটি পাঠানো হয় না বলে অভিযোগ। রাজ্যপালের বক্তব্য, ‘টেকনিক্যাল রিপোর্ট’ না পাঠিয়ে রাজ্য সরকার পরে বিল পাশ না হওয়ার জন্য রাজভবনের উপর দোষারোপ করে। যা সঠিক নয়। নিয়ম অনুযায়ী, ওই রিপোর্ট ছাড়া রাজ্যপাল কোনও বিলে সম্মতি দিতে পারেন না। ‘অপরাজিতা’ বিলের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রেও কেন রাজ্য ‘হোমওয়ার্ক’ করেনি, কেন ওই রিপোর্ট বিলের সঙ্গে পাঠানো হয়নি, তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাজ্য।
নিয়মানুযায়ী, বিধানসভায় পাশ হওয়া যে কোনও বিল পাঠানো হয় রাজভবনে। সেই বিলে রাজ্যপাল স্বাক্ষর করলে তা আইনে পরিণত হয়। কিন্তু বিল নিয়ে রাজ্যপাল যদি কোনও সিদ্ধান্তে আসতে না পারেন, বা কোনও পরামর্শের প্রয়োজন হয়, তবে তা তিনি পাঠিয়ে দেন রাষ্ট্রপতির কাছে। সেই বিলের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন রাষ্ট্রপতিই। গত ৩ সেপ্টেম্বর ‘অপরাজিতা বিল’ রাজ্য বিধানসভায় পাশ হওয়ার পর আপাতত তা রাজভবনে পাঠানো রয়েছে। ব্যতিক্রমী ভাবে এই বিল দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দরবারেও পাঠিয়েছে রাজ্য সরকার।
রাজভবন সূত্রে খবর, ধর্ষণ-বিরোধী বিলটিরও সমালোচনা করেছেন রাজ্যপাল। তাঁর মতে, এই বিল আসলে অন্যান্য রাজ্যের অনুরূপ বিলের ‘অনুকরণ’ মাত্র। একই ধরনের বিল আনা হয়েছে মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, অরুণাচল প্রদেশের মতো রাজ্যেও। এই ধরনের বিল রাষ্ট্রপতির দরবারে আটকে রয়েছে বলেও ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন তিনি।
Be the first to comment