সিবিআইয়ের করা এফআইআরকে চ্যালেঞ্জ করে দিল্লি হাইকোর্টে গেলেন সিবিআইয়েরই স্পেশ্যাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানা। তাঁর ঘনিষ্ঠ অপর যে অফিসারকে সোমবার গ্রেফতার করা হয়েছে, সেই দেবেন্দ্র কুমারও জামিন চেয়ে হাইকোর্টের শরণাপন্ন হয়েছেন।
হায়দরাবাদের ব্যবসায়ী সতীশ সানার বক্তব্যের ভিত্তিতে সিবিআই আস্থানার বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে। সতীশ সানার বিবৃতি নিয়ে জালিয়াতি করার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন দেবেন্দ্র । ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে বড় ধরনের আর্থিক অপরাধের অভিযোগ আছে। তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত চলছে। সতীশের দাবি, মনোজ প্রসাদ নামে দুবাইয়ের এক ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকার তাঁকে আস্থানার হয়ে প্রস্তাব দেন, পাঁচ কোটি টাকা দিলে তিনি তদন্ত বন্ধ করে দেবেন। মনোজ প্রসাদ ১৬ অক্টোবর ভারতে ফেরার পর গ্রেফতার হয়েছেন। অভিযোগ, ঘুষের টাকা নিতেই তিনি দুবাই থেকে এসেছিলেন ভারতে।
সিবিআইয়ের দাবি, মনোজকে গ্রেফতার করার পরে জানা যায়, আস্থানা ‘র’-এর এক অফিসারের সঙ্গে অন্তত নবার ফোনে কথা বলেছেন। মনোজ ধরা পড়ার পরে পাছে তাঁদের নাম ফাঁস হয়ে যায়, সেজন্য দুজনেই ভয় পাচ্ছিলেন। ‘র’-এর ওই অফিসারের সঙ্গেও মনোজের যোগাযোগ ছিল।
আস্থানার পালটা অভিযোগ, ঘুষ নিয়ে সতীশকে দেশের বাইরে পালানোর সুযোগ করে দিতে চেয়েছিলেন তাঁর বস তথা সিবিআইয়ের ডিরেক্টর অলোক বর্মা। কিন্তু তিনি সতীশকে আটকে দেন। তাই অলোক বর্মা তাঁকেই ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন। কয়েকদিন আগে আস্থানা অভিযোগ করেন, গুজরাতের স্টার্লিং বায়োটেক নামে এক ঋণখেলাপি সংস্থার সঙ্গে তাঁর নাম জড়াতে চাইছেন অলোক শর্মা।
মন্ত্রিসভার সচিবালয়ে চিঠি দিয়ে আস্থানা বলেছেন, সতীশ জেরার সময় স্বীকার করেন, তিনি অলোক বর্মাকে ঘুষ দিয়েছেন। এছাড়া ওই চিঠিতে সিবিআই ডিরেক্টরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির আরও কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ আছে। অন্যদিকে গতবছর যখন আস্থানাকে সিবিআইয়ের স্পেশ্যাল ডিরেক্টর নিয়োগ করা হল, তখনই আপত্তি জানিয়েছিলেন অলোক। তিনি বলেছিলেন, যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে এক ঋণখেলাপি সংস্থার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে, তাঁকে এত গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো ঠিক নয়।
কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী টুইটারে লেখেন, প্রধামন্ত্রীর প্রিয়পাত্র, গুজরাত ক্যাডারের অফিসার, গোধরা নিয়ে তদন্তে যিনি বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন, সেই আস্থানাকে জোর করে সিবিআইয়ের দুনম্বর পদে বসানো হয়েছিল। তিনি এখন ঘুষ নিতে গিয়ে ধরা পড়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর অধীনে সিবিআই হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার অস্ত্র। তার মধ্যে শুরু হয়েছে লড়াই। সংস্থাটি ধ্বংসের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে।
Be the first to comment