ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বুঝে নেওয়ার খেলা মনেহয় শুরু হয়ে গেছে। অনুব্রত মণ্ডল অবশ্য আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন “খেলা শুরু হয়ে গেছে।” এবার সেই খেলার আরও এক পর্ব। বিজেপি নেতা রাকেশ সিংকে তলব করল কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। আজ তাঁকে দেখা করতে বলা হয়েছে। মাদক পাচার কাণ্ডে তাঁর নাম জড়িয়ে যাওয়াতেই তলব।
মাদক পাচার কাণ্ডে গ্রেপ্তার করা হয় বিজেপি যুব মোর্চার নেত্রী পামেলা গোস্বামী। আদালত চত্বরে সংবাদ মাধ্যমের সামনেই তিনি বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে আছে রাকেশ সিং এবং চক্রান্ত করে তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। ঘটনার তদন্তভার সি আই ডির হাতে তুলে দেওয়ার দাবি করেন তিনি। আর এর পরেই ডাক পড়ে রাকেশের।
বারবারই বিভিন্ন অভিযোগে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে রাকেশের নাম। কিন্তু কে এই রাকেশ? উত্থানই বা কীভাবে?কংগ্রেস শ্রমিক নেতা হিসেবে পরিচিতি ছিল রাকেশের। অধীর ঘনিষ্ঠ। ২০১৯ লোকসভা ভোটের আগের ঢাকঢোল পিটিয়ে দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। আর তারপর থেকে কৈলাশ ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিতি রয়েছে রাকেশের।
২০১৯ সালের ১৮ মে খিদিরপুরের অরফ্যানগঞ্জ বাজারে দুই পুলিশকর্মীকে মারধরের ঘটনায় নাম উঠে আসে রাকেশের। এরপর সেই ঘটনায় ৫ জুন কলকাতা বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁরে। কাজে বাধা দিয়ে মারধর করে খুনের চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে।
এর আগে ২০১৫ সালে হেয়ার স্ট্রিট থানার একটি মামলায় কোর্টে চত্বরেই তদন্তকারী অফিসারকে হেনস্থা ও ফাইল কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় জেল হয় রাকেশের। এরপর বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙা এবং অমিত শাহের রোড শোতে ঝামেলা পাকানোর জন্য়ও নাম জড়ায়। যদিও সব ক্ষেত্রেই নিজের দোষ অস্বীকার করেন তিনি। তাঁর একটাই বক্তব্য, “বিরোধীদের চক্রান্ত।”
এইসব ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই মাদক পাচার কাণ্ডে নাম জড়িয়ে পড়ল রাকেশের। বিভিন্ন সূত্র মাধ্যমে জানা গেছে, বিজেপিনেত্রী পামেলা গোস্বামী যে মাদকের কারবার করেন তা আগে থেকেই খবর পেয়েছিল কলকাতা পুলিশ। নজর রাখছিলেন। এরপর নিউ আলিপুরে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর সঙ্গীর কাছ থেকেও প্রচুর পরিমাণে মাদক দ্রব্য় বাজেয়াপ্ত করা হয়।
পামেলা বিজেপি যুব মোর্চার নেত্রী। সোশাল মিডিয়ায় পরিচিত মুখ। সুদর্শনা। বাংলা ইংরাজি তো বটেই ফরাসি ভাষাতেও গরগর করে কথা বলতে পারেন। একসময় বিখ্যাত বিমান সংস্থার এয়ার হোস্টেস ছিলেন। ইন্টিরিযর ডিজাইনিং সংস্থায় কাজ করতেন। পাশাপাশি মডেলিংও পেশা ছিল তাঁর।
কিন্তু কেন রাকেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাঁর?
কেন অভিযোগ, পরিষ্কার নয়। তবে সূত্রের খবর কয়েকদিন আগে বিজেপির একটি সভামঞ্চে উঠতে দেওয়া হয়নি তাঁকে। তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশও করেছিলেন। শুধু এটাই নয় এর সঙ্গে দলের বেশ কিছু বিষয় নিয়েও ক্ষোভ ছিল পামেলার।
তাহলে কি বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হচ্ছিল বলেই পামেলাকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হল নাকি রাকেশের বিরুদ্ধে যে অভিয়োগ তোলা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তদন্তের গতিপ্রকৃতির দিকে তাকিয়ে সবাই।
Be the first to comment