১৫ বছর আগে ৭ ডিসেম্বর প্রথম ছত্তিসগড়ের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছিলন রমণ সিং। মুখ্যমন্ত্রী পদে ৫ হাজার দিন পূর্ণ করেছেন গত অগাস্ট মাসে। টানা তিনটি নির্বাচনে বিজেপিকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত যা ট্রেন্ড, ছত্তিসগড়ে ক্ষমতায় আসছে কংগ্রেস।
এবারের মতো ক্ষমতা হারালেও একটা রেকর্ড করে ফেলেছেন রমণ। আর কোনও বিজেপি নেতা তাঁর মতো এতদিন মুখ্যমন্ত্রী থাকেননি। তাঁর পরে, ২০১৪ সালের মে মাসে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তিনি মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন ৪৬১০ দিন।
রমণ সিং আগে পেশায় ছিলেন ডাক্তার। বয়স ৬৬। তিনি কৃষক পরিবারের সন্তান। ১৯৫২ সালের ১৫ অক্টোবর জন্ম। এমবিবিএস পড়ার জন্য প্রি মেডিকেল পরীক্ষায় পাশ করেছিলেন। কিন্তু বয়স কম হওয়ায় তাঁকে ভর্তি করা হয়নি। তখন তিনি আয়ুর্বেদ নিয়ে পড়াশোনা করেন। ২৩ বছর বয়সে বিএএমএস ডিগ্রি লাভ করেন। চিকিৎসক হিসাবে তিনি গ্রামের মানুষের কাছে জনপ্রিয় ছিলেন। ওই সময় থেকে আরএসএস এবং বিজেপির ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন।
রাজনীতিতে আসেন ১৯৯০ সালে। সেবার মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় নির্বাচিত হন। ১৯৯৩ সালে দ্বিতীয়বার বিধায়ক হন। ১৯৯৯ সালে রাজনন্দনগাঁও লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়লাভ করেন। অটলবিহারী বাজপেয়ী মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। ২০০৩ সালে দল তাঁকে ছত্তিসগড়ের মুখ্যমন্ত্রী করে।
রাজনীতিতে আসার পরে তাঁর নাম হয় চাউরওয়ালা বাবা। তিনি গরিবদের জন্য কম দামে চাল দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন বলে ওই নাম হয়। তাঁর আমলে রাজ্যে মাওবাদীরা শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ২০০৫ সালে তাদের দমন করতে শুরু হয় ‘সালওয়া জুড়ুম’ বা শান্তি অভিযান। সুপ্রিম কোর্টে ওই অভিযানকে নিন্দা করা হয়। বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণ ও দুর্নীতিরও অভিযোগ ওঠে। কিন্তু রমণ সিং-এর ব্যক্তিগত ইমেজ ছিল স্বচ্ছ। তাঁর নামে কেউ দুর্নীতি বা অন্য অভিযোগ করতে পারেনি।
চতুর্থবার বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারের সময়ই বোঝা গিয়েছিল, বিজেপির জনপ্রিয়তা কমছে। ফসলের দাম না পেয়ে অসন্তুষ্ট হয়েছিল কৃষকরা। অন্যান্য পশ্চাৎপদ শ্রেণির এক বড় অংশ কংগ্রেসকে সমর্থন করেছিল। সরকার বিরোধী হাওয়া ছিল বিজেপির বিরুদ্ধে। রমণ সিং বিজেপিকে জেতাতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় ছিল অনেকেরই। তার ওপরে শুক্রবার একজিট পোলের ফলে দেখা যায়, ছত্তিসগড়ে জিততে চলেছে কংগ্রেস। বিজেপি নেতারা অবশ্য বলেছিলেন, একজিট পোলের ফলে বিশ্বাস করেন না। কিন্তু অন্তত ছত্তিসগড়ের ক্ষেত্রে একজিট পোল মিলে গেল।
Be the first to comment