নিজেরা যে মুনাফা করেন, তার কিছু অংশ স্থানীয় চাষি ও অন্যান্য মানুষের সঙ্গে ভাগ করে নিন। যোগগুরু রামদেবের ঘনিষ্ঠ এক কোম্পানিকে এমনই নির্দেশ দিল উত্তরাখণ্ড হাইকোর্ট।
উত্তরাখণ্ড বায়ো-ডাইভারসিটি বোর্ডের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেছিল রামদেবের কোম্পানি দিব্য ফার্মেসি। বিচারপতি সেই আবেদন গ্রাহ্য করেননি। উলটে ২০০২ সালের জৈব বৈচিত্র আইন অনুযায়ী ওই সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছে, স্থানীয় মানুষের সঙ্গে মুনাফা ভাগ করে নিন।
বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চ বলে, সবাই জানে, আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরির জন্য জীবজগৎ থেকেই উপাদান সংগ্রহ করতে হয়। দিব্য ফার্মেসি সংস্থাটি ৪২১ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যে চাষিরা ওষুধ তৈরির কাঁচামাল উৎপাদন করেছিল, তাদের সঙ্গে দু’কোটি টাকা ভাগ করে নিতে হবে।
এর আগে উত্তরাখণ্ড বায়ো ডাইভারসিটি বোর্ড দিব্য ফার্মেসিকে নির্দেশ দেয়, চাষি এবং অন্যান্য স্থানীয় মানুষের সঙ্গে মুনাফা ভাগ করে নিতে হবে। কিন্তু রামদেবের কোম্পানি বলে, ওই বোর্ডের এমন নির্দেশ দেওয়ার এক্তিয়ার নেই। কোনও সংস্থা স্থানীয় মানুষকে মুনাফার ভাগ দিতে বাধ্য নয়।
হাইকোর্ট বলে, ভারত রাষ্ট্রসঙ্ঘের জৈব বৈচিত্র কনভেনশনের সদস্য। আমরা জৈব বৈচিত্র রক্ষা সংক্রান্ত চুক্তি মানতে বাধ্য। বোর্ড অবশ্যই কোনও কোম্পানিকে নির্দেশ দিতে পারে। কোনও অঞ্চলের জৈব বৈচিত্র শুধু সরকারের সম্পত্তি নয়, স্থানীয় মানুষেরও সম্পত্তি।
বাবা রামদেবের মূল কোম্পানির নাম পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ লিমিটেড। তা একটি ভারতীয় ভোগ্যপণ্যের কোম্পানি। তার কারখানা হরিদ্বারের শিল্পতালুকে অবস্থিত। রেজিস্টার্ড অফিস দিল্লিতে। এই কোম্পানি খনিজ ও গাছগাছড়া দিয়ে নানা জিনিস তৈরি করে। নেপালেও এই সংস্থার কারখানা আছে।
পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ লিমিটেড ভারতের সবচেয়ে দ্রুত বিকাশশীল কোম্পানি। তার মূল্য ৩ হাজার কোটি টাকা। অনেকের ধারণা, ২০১৫-১৬ সালের আর্থিক বছরে তার মুনাফা ছিল ৫ হাজার কোটি টাকা। ২০১৬-১৭ সালে পতঞ্জলি ১০ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করবে বলে লক্ষমাত্রা স্থির করেছিল।
২০০৬ সালে বাবা রামদেব এবং আচার্য বালকৃষ্ণ মিলে পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল, আয়ুর্বেদ সংক্রান্ত প্রাচীন জ্ঞান এবং আধুনিক প্রযুক্তির মেলবন্ধন ঘটানো। ২০১৬ সালে সারা দেশে পতঞ্জলির ৪৭০০ দোকান ছিল। এছাড়া প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ রেল স্টেশন ও বিমান বন্দরে আউটলেট খুলবে।
Be the first to comment