রামপুরহাট- হত্যাকান্ডের মামলায় রায়দান স্থগিত রাখল কলকাতা হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার এই মামলার দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে জমা পড়ল কেস ডায়েরি। রাজ্যের তরফে এ দিন জানানো হয়েছে, নিরাপত্তার স্বার্থে সিসিটিভি বসানো হয়েছে এলাকায়। বুধবারই এই সিসিটিভি বসানোর নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে ছিল এই মামলার শুনানি।
এ দিনের শুনানিতে একে একে বিভিন্ন প্রশ্ন ওঠে। সিটের তদন্তের দায়িত্ব কেন জ্ঞানবন্ত সিং-কে দেওয়া হল, সেই প্রশ্ন তুলেছেন মামলাকারীর আইনজীবী। সব পক্ষকেই এ দিন বলতে দেওয়া হয়েছিল। নির্ধারিত সময়ের থেকে বেশি সময় ধরে চলে শুনানি। শুনানি শেষ হওয়ার পর রায়দান স্থগিত রাখা হয়েছে। ওয়েবসাইটে আপলোড করা হবে সেই অর্ডার।
মামলাকারীদের বক্তব্য ছিল, থানা থেকে ঘটনাস্থলের দূরত্ব দেখতে হবে। পুলিশ নিজে থেকে ঘটনাস্থলে গিয়েছিল নাকি অভিযোগ পাওয়ার পরে যায়? সেই প্রশ্নও তুলেছেন মামলাকারীরা। টাওয়ার ডাম্পিং প্রযুক্তির ব্যবহার করে ঘটনাস্থলে কারা উপস্থিত ছিল তা জানার জন্য সওয়াল করেন তাঁরা
এ ছাড়াও মামলাকারীদের প্রশ্ন, নমুনা সংগ্রহ কী ভাবে হয়েছিল? প্রথম নমুনা সংগ্রহ করে তদন্তকারী আধিকারিক, তারপর তিনি উপযুক্ত ভাবে চিহ্নিত করে ফরেনসিক কে দেন। এটা কি হয়েছে? নমুনা সংগ্রহের ভিডিয়োগ্রাফি হয়েছিল? ময়নাতদন্তের রিপোর্ট কী বলছে? পুড়ে মৃত্যু? নাকি অন্যভাবে? কোনও আঘাত ছিল কিনা, এসব প্রশ্নই উঠে আসে
মৃতদেহ সম্পূর্ন শুষ্ক ছিল কি না, কোনও তরল বা পাউডার ব্যাবহার করা হয়েছে কি না সেটা দেখার কথাও বলা হয় আদালতে। সব দেহ কি একই ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে? কেস ডায়েরি থেকে সেই তথ্য বের করার কথাও বলা হয়।
এজি সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় আদালতে জানিয়েছেন, ঘটনার কেস ডায়েরি তুলে দেওয়া হয়েছে আদালতের হাতে। রাজ্য জানিয়েছে সিসিটিভিও বসানো হয়েছে। নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। সব ময়নাতদন্তের ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। সব রাজনৈতিক দলের নেতারা সেখানে গিয়েছেন, এই তথ্যও দেন এজি।
মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল বলেন, ‘ডিজির উপস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী বলছেন ডিজিকে কী করতে হবে, কী সেকশন দিতে হবে সেটাও মুখ্যমন্ত্রী বলে দিচ্ছেন। তাহলে কীভাবে তদন্ত হবে?’ মামলাকারীদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী আজ গিয়ে ক্ষতিপূরণ দিয়েছেন। আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এতে প্রমাণ চেপে দেওয়া হবে। সাক্ষীরা নাও মুখ খুলতে পারেন।
হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে বৃহস্পতিবার সকালেই বগটুইয়ে সিসিটিভি লাগায় প্রশাসন। নারকীয় ‘হত্যাকান্ডে’ যে সব বাড়িতে আগুন লাগানো হয়, সেখানে ও গ্রামের একাধিক জায়গায় সিসিটিভি লাগিয়েছে প্রশাসন। কোনওভাবেই কেউ যাতে তথ্য প্রমাণ লোপাট করতে না পারে, তার নজরদারি করা হবে।
Be the first to comment