শোভনের ওয়ার্ডে প্রার্থী রত্না, পর্ণশ্রীর বাড়ি ছাড়ার নোটিস পাঠালেন বৈশাখী

Spread the love

রত্না চট্টোপাধ্যায়কে আইনি নোটিস পাঠালেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। পর্ণশ্রীর বাড়ি ছাড়ার নোটিস পাঠিয়েছেন তিনি। বাড়িটি তিনি কিনে নিয়েছেন বলে নোটিসে দাবি করেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও এই নোটিস নিয়ে খুব হালকা চালেই জবাব দিয়েছেন রত্না। শনিবার ভোট প্রচারে বেরিয়ে রত্না চট্টোপাধ্যায় হাসতে হাসতে বলেন, ‘লোটা কম্বল গোটানো আছে। ভোট শেষ হলেই চলে যাব।’

পর্ণশ্রীর মহারানি ইন্দিরা দেবী রোডের ১৩৯ ডি/৪ নম্বর যে বাড়িটি তা শোভন চট্টোপাধ্যায়ের। সূত্রের খবর সেই বাড়িটি বিক্রি করা হয়েছে। বাড়িটি কিনেছেন শোভনের বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। ১ কোটি টাকার বিনিময়ে এই বাড়িটি বিক্রি হয়েছে বলে খবর। এমনও অভিযোগ, শোভন চট্টোপাধ্যায়ের আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ হওয়ায় এই বাড়িটি তিনি বিক্রি করে দিয়েছেন। এদিকে যে বাড়িটি বিক্রি করা হয়েছে, সেখানেই সন্তানদের নিয়ে রত্না চট্টোপাধ্যায় থাকেন।

সেই বাড়ি খালি করার জন্য আগেই রত্নাকে বার্তা দিয়েছিলেন বৈশাখী। রত্নাও তখন বলেছিলেন, “যদি বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কাছ থেকে এই বাড়ি কোটি টাকায় কিনে থাকেন, তা হলে এ বাড়ির মালিক এখন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। তার প্রমাণ আমাকে দেখাতে হবে। কাগজপত্র দেখাতে হবে। কী ভাবে কেনা হয়েছে তা আমাকে জানাতে হবে। সে সব অবশ্য আইনই বলবে। আইনের পথে গোটা বিষয়টা চলবে। বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষমতা থাকলে আমাকে এবং আমার ছেলে মেয়েকে এই বাড়ি থেকে বের করে তার পজিশন নিক।”

যদিও শনিবার ভোট প্রচারে বেরিয়ে রত্না চট্টোপাধ্যায় বেশ হালকা মেজাজেই সামলালেন আইনি নোটিসের বিষয়টি। কিছুটা গুরুত্ব না দিয়েই রত্না চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমি লোটাকম্বল গুছিয়েই রেখেছি। ভোটটা হলেই বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যাব।”

বেহালা পূর্বের বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায়। কাগজে কলমে এখনও তিনি শোভন চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী। রাজনৈতিক মহলের পর্যবেক্ষণ, সময়ের সঙ্গে রাজনৈতিক পরিচিতিও হারিয়েছেন শোভন। কখনও তৃণমূল, কখনও বিজেপি, আবার কখনও তৃণমূল ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা সব মিলিয়ে আপাতত তাঁর রাজনৈতি জীবন একটা বড় প্রশ্নচিহ্নের মুখে দাঁড়িয়ে। উল্টো দিকে রত্না চট্টোপাধ্যায় ধীরে ধীরে বেশ পোক্ত রাজনীতিক হয়ে উঠছেন। তৃণমূল তাঁকে এগিয়ে দিচ্ছে, তিনিও সেই সুযোগ সম্পূর্ণ কাজে লাগিয়ে হেঁটে চলেছেন।

শোভন চট্টোপাধ্যায়ের এলাকা হিসাবেই পরিচিত ১৩১ নম্বর ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডের পুর-প্রতিনিধি হিসাবেই কলকাতার মেয়র হয়েছিলেন শোভন। সেই ওয়ার্ডেই এবার তৃণমূলের টিকিট পেলেন রত্না চট্টোপাধ্যায়। রত্নার দাবি, শোভন রাজনীতির মূল স্রোত থেকে সরে যাওয়ার পর তিনিই এই ওয়ার্ড সামলেছেন। তাই এই টিকিট তাঁর প্রাপ্যই ছিল।

রত্না চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমি প্রায় চার বছর ধরে এই ওয়ার্ডের হাল ধরেছি। ওয়ার্ডের সঙ্গে এতটাই আত্মিকভাবে জড়িয়ে গিয়েছি যে আমার কখনও মনে হয়নি আমি কাউন্সিলর নই।” তিনি আরও জানান, এই ওয়ার্ডের মানুষের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা এতটাই যে সবাই জানে, কারও কোনও অসুবিধা হলে রত্নাদি আছেন। রত্নার কথায়, “আমি ভাবিনি কোনও দিন বিধায়ক হব, সেই সম্মান দেওয়ার জন্য আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে কৃতজ্ঞ। তবে আমার আশা ছিল ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হব।” তবে ভোট প্রচারের মধ্যে আবার আইনি জটিলতা। যদিও সেসব আপাতত রত্না গুরুত্বই দিচ্ছেন না।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*