রিজার্ভ ব্যাঙ্কের স্বাধিকারে সরকার নাক গলাচ্ছে বলে গত সপ্তাহে যখন মুখর হয়েছিল বিরোধীরা, তার মধ্যেই নাকি ব্যাঙ্কের গভর্নর উর্জিত প্যাটেলের সঙ্গে একদফা বৈঠক সেরে ফেলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী । গত শুক্রবার তাঁর সঙ্গে উর্জিত প্যাটেলের কথা হয়েছে । মোদী তাঁকে বুঝিয়ে বলেছেন, সরকারের সামনে এখন কী দায়বদ্ধতা রয়েছে । আরও বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে তিনি আলোচনা করেছেন। তার মধ্যে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের স্বশাসনের প্রশ্নটিও ছিল ।
একটি সূত্রে জানা যায়, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায় ঋণ মকুবের কথা ভাবছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। কয়েকটি ব্যাঙ্ককে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে যে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে । মোট ১১ টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে এখন ঋণ দেবে না বলে ঘোষণা করেছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক । নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা যায় কিনা, তা নিয়েই চিন্তাভাবনা চলছে । শোনা গিয়েছিল, এই নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার জন্যই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ওপরে চাপ দিচ্ছিল কেন্দ্রীয় সরকার ।
কংগ্রেসের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার নির্বাচনের আগে আর্থিক সংকটে ভুগছে । সেজন্য তারা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তহবিল থেকে ১ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ চেয়েছিল । রিজার্ভ ব্যাঙ্ক রাজি না হওয়ায় সরকার আরবি আই অ্যাক্টের সেকশন সাত প্রয়োগ করার কথা বলে। ওই ধারা প্রয়োগ করার অর্থ সরকার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের স্বশাসনে হস্তক্ষেপ করছে। এর আগে কোনও সরকার এমন কাজ করেনি ।
আগামী সোমবার বৈঠকে বসতে পারে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বোর্ড । প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদ্মম্বরম বলেছিলেন, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আগামী দিনে কোন পথে যাবে, তা চূড়ান্ত হবে ওই দিনে । তবে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বোর্ডে সরকার নিজের লোক বসিয়ে রেখেছে। বোর্ড যদি সরকারের কথা মেনে নেয়, তাহলে গভর্নরের ইস্তফা দেওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না ।
পর্যবেক্ষকদের মতে, যদি সত্যিই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বোর্ড সরকারের কথা মেনে নেয়, তা হলে সুদের হার কমতে পারে । রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ক্রমাগত সুদের হার বাড়িয়ে চলায় অর্থমন্ত্রক অসন্তুষ্ট । সরকার চায় সুদের হার কমানো হোক । কিন্তু রিজার্ভ ব্যাঙ্ক মনে করে, সুদের হার স্থির করার একমাত্র অধিকার আছে তাদেরই ।
গত ২৬ অক্টোবর প্রথম রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে সরকারের বিরোধের কথা প্রকাশ্যে আসে । ডেপুটি গভর্নর বিরাল আচার্য এক ভাষণে বলেন, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের স্বশাসনে সরকার যদি হস্তক্ষেপ করে, বিপর্যয় ঘটবে ।
Be the first to comment