সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে নেতাজি সম্পর্কিত বাংলার ট্যাবলো বাতিল করে দিয়েছে কেন্দ্র ৷ যা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে ৷ এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গতকালই প্রধানমন্ত্রীকে নিজের হতাশার কথা জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এবার মমতার সুরে সুর মেলালেন বিজেপি নেতা তথা অসম ও মেঘালয়ের প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায় ৷ এদিন সকালে টুইটারে প্রধানমন্ত্রীর কাছে নেতাজি এবং আইএনএ’র ট্যাবলো সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে রাখার আবেদন জানালেন তিনি ৷ বিজেপির জাতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছেন ৷ কিন্তু তাঁর উল্টোপথে হেঁটে তথাগতের এই টুইট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল ৷
এদিন তথাগত রায় তাঁর টুইটে লেখেন, ‘‘আমার প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন, অনুগ্রহ করে পশ্চিমবঙ্গের ট্যাবলোকে সাধারণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে অনুমতি দিন ৷ যেখানে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সম্পর্কে জানা যাবে ৷ যাঁর বাহিনী আইএনএ ব্রিটিশ সেনার বিশ্বাসকে নাড়িয়ে দিয়েছিল এবং তাঁদের প্রস্থানকে ত্বরান্বিত করেছিল ৷
এবছর ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর উদযাপন ৷ সেইসঙ্গে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মবার্ষিকীও পালন হচ্ছে ৷ তাই ভারতের সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে নেতাজি এবং তাঁর এনআইএ’র ট্যাবলো রেখেছিল বাংলা ৷ যেখানে গতবছর থেকে নেতাজির জন্মদিনকে পরাক্রম দিবস হিসেবে পালন করছে কেন্দ্র ৷ সেখানে সাধারণতন্ত্র দিবসে রাজ্যের দেওয়ার বাংলার ট্যাবলোর প্রস্তাব খারিজ করে দেওয়ার সিদ্ধান্তের সমালোচনা শুরু হয়েছে ৷
এনিয়ে মুখ্যমন্ত্রীও গতকাল প্রধানমন্ত্রীকে একটি চিঠি লিখেছেন। যেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেছেন ৷ জানিয়েছেন, ‘‘সাধারণতন্ত্র দিবসের প্যারেডে বাংলার প্রস্তাবিত ট্যাবলোকে বাতিল করার কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তে আমি বিস্মিত এবং দুঃখিত ৷ নির্দিষ্ট কোনও কারণ ছাড়াই ট্যাবলো বাতিল করায় আমরা অত্যন্ত অবাক ৷ প্রস্তাবিত ট্যাবলোটি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মবার্ষিকী এবং তাঁর আইএনএ-র থিম দিয়ে তৈরি হয়েছিল ৷ ট্যাবলোটি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, স্বামী বিবেকানন্দ, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস, শ্রী অরবিন্দ, মাতঙ্গিনী হাজরা, নজরুল ইসলাম, বিরসা মুণ্ডা এবং অন্য আরও অনেক দেশপ্রেমিকদের ছবিতে সাজানো হয়েছিল ৷’’
নেতাজিকে নিয়ে বাঙালি ঠিক কতটা আবেগপ্রবণ তাও চিঠিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন মমতা ৷ লিখেছেন, ‘‘কেন্দ্রের এই আচরণে পশ্চিমবঙ্গবাসী ভীষণ দুঃখ পেয়েছেন ৷ ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে বাংলা সবসময় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে ৷ দেশভাগের সময় এবং কোটি কোটি ভারতবাসীর জন্য বাংলাকে চড়া মূল্য দিতে হয়েছে ৷ দেশের ৭৫তম স্বাধীনতার বছরে সাধারণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে উপরোক্ত স্বাধীনতা সংগ্রামীরা স্থান না পাওয়ায় আমরা বিস্মিত ৷’’
Be the first to comment