চিরন্তন ব্যানার্জি:-
শুক্রবার বিনা চিকিৎসায় যুবকের মৃত্যুর ঘটনার অভিযোগ খণ্ডন করলেন আরজি কর হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকরা। চিকিৎসকদের দাবি খুবই আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই যুবকে নিয়ে আসা হয় হাসপাতালে। হাসপাতালে আনার পরই তাকে সাথে সাথে নিয়ে যাওয়া হয় ট্রমা কেয়ারে। সেখানে সিনিয়র চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে শুরু হয় চিকিৎসা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবেই তাঁকে বাচানো যায়নি।
শনিবার জুনিয়র চিকিৎসকদের তরফে জানানো হয়, “হুগলির ওই বছর ২৮-শের যুবকটিকে আমরা বাঁচাতে পারিনি এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু, তাঁর চিকিৎসায় কোনো গাফিলতি হয়নি। তাঁকে আনামাত্রই নিয়ম মেনে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। ড্রিপ চালু করা হয়। তাঁর এক্সরে করা হয়। তাঁকে রক্ত দেওয়া প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। তাই রক্তের জন্য রিকুইজিশন দেওয়া হয়। এরপরেই তাঁকে সিটি স্ক্যানের জন্য পাঠানো হয়। সেখানেই হঠাৎ প্রবল শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তাঁর। তারপরেই মৃত্যু হয় ওই যুবকের।”
তাঁদের দাবি, দু-পায়ে চোটের পাশাপাশি মাথাতেও আঘাত পেয়েছিলেন ওই যুবক। দুটো পায়ের বেশ কয়েকটি হাড় ভাঙা ছিল। এই ক্ষেত্রে যে ভাবে চিকিৎসা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া দরকার সেভাবেই এগিয়েছেন হাসপাতালের সিনিয়র ডাক্তাররা। কিন্তু বাঁচানো যায়নি তাঁকে। আরজি করের এমএসভিপি সপ্তর্ষি চট্টোপাধ্যায়ও দাবি করেন, চিকিৎসার গাফিলতিতে মৃত্যুর অভিযোগ একেবারেই ঠিক নয়। দুর্ঘটনায় জখম ওই ব্যক্তিকে খুবই আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। সঙ্গে সঙ্গেই সেই সময় কর্মরত সিনিয়র ডাক্তাররা তাঁর উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু বাঁচানো যায়নি ওই যুবককে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার সকালে কোন্নগর বেঙ্গল ফাইন মোড়ের কাছে রাজীব গান্ধী রোডে একটি ডাম্পার চাপা দিয়ে চলে যায় বিক্রম ভট্টাচার্য নামে বছর আঠাশের ওই যুবককে। বিবেকনগর দ্বারিক জঙ্গল বাইলেনে একটি বাড়িতে মা ও দিদিমাকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন ওই যুবক। গাড়ি চালাতেন। ওইদিন সকালে দুর্ঘটনায় তার পা দুটি গুরুতর জখম হয়। তড়িঘড়ি তাঁকে শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় তাঁকে। বিক্রমের পরিবারের অভিযোগ, জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি চলায় প্রায় তিনঘণ্টা বিনা চিকিৎসায় পড়ে থেকে সেখানেই মৃত্যু হয় ওই যুবকের।
উল্লেখ্য, এই ঘটনার পর শনিবার সকালে ওই মৃত যুবকের বাড়ি গিয়ে মৃতের মায়ের সাথে দেখা করেন কোন্নগর পুরসভার পুরপ্রধান স্বপন দাস। সেখানে গিয়ে স্বপনবাবু বলেন, তিনি বলেন, “অনুনয় বিনয়, আকুতির পরও কেউ এগিয়ে আসেনি। এতটুকু সহানুূভূতি দেখায়নি। আন্দোলন অবশ্যই করুক, কিন্তু এভাবে একজনের বিচারের জন্য হাজার মায়ের কোল খালি করাটা মেনে নেওয়া যায় না।”
Be the first to comment