রমিতা দত্ত, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, ইন্ডিয়া টুডে গ্রুপ
রমিতা দত্ত। ইংরাজী সাহিত্যের ছাত্রী। প্রেসিডেন্সী কলেজ থেকে পড়াশোনা করেছে। তারপর সাংবাদিকতায় প্রবেশ। অত্যন্ত সাহসী সাংবাদিক। তাঁর লেখা নিয়ে বিরোধীপক্ষ আদালত পর্যন্ত গিয়েছিলো। তবুও কলম থেকে থাকেনি। মূলত প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক রমিতা। প্রশাসনিক বিট করেন। বামফ্রন্ট আমলে রাইটার্সে এবং বর্তমান সরকারের আমলে নবান্নে রমিতাকে নিয়মিত দেখা যায়। স্বামী সরসিজও সাংবাদিক ছিলেন। বর্তমানে অধ্যাপক। সাংবাদিকতার পাশাপাশি সমাজ সেবা মূলক বেশ কিছু কাজ করে থাকেন রমিতা। একমাত্র পুত্র উপমন্যু বলে সে তার মায়ের জন্য গর্বিত। নারী ক্ষমতায়নের এটাই একটা উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হতে পারে।
রমিতাকে আমরা ৮ই মার্চ নিয়ে জিজ্ঞেস করি। তিনি বলেন, প্রত্যেকটা দিন ৮ই মার্চ হওয়া ভালো। তাহলে প্রতিদিনই নারীরা প্রাধান্য পাবে। মহিলাদের লড়াই প্রতিদিনের। তাদের অস্তিত্ত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াই, তাই সেই লড়াইকে কোনো বিশেষ দিনের জন্য আবদ্ধ না রেখে ৩৬৫ দিনই পালন করা উচিত।
এখনকার মহিলারা আগে তুলনায় অর্থনৈতিক ভাবে খানিকটা স্বাধীন। আমরা যদি নিম্নবিত্ত পরিবারগুলিকে ধরি সেখানকার মেয়েরা সারাদিন পরিশ্রম করছে, সংসার ঠেলছে। কাজের বিনিময়ে রোজগারের টাকা হাতে পেলে তা কেড়ে নেয় মাতাল স্বামী। তার ওপর মারধোরও খেতে হচ্ছে। তবু কপালে চওড়া সিঁদুর, শিবরাত্রীতে সেই স্বামীর দীর্ঘজীবন কামনা এটাই এইসব মহিলাদের জীবন চর্চা। জিজ্ঞেস করলে বলে মাথার ওপর কেউ আছে তো তাই সুরুক্ষিত মনে হয়। আমি বলি, বেরিয়ে এসো। কম্প্রোমাইজ নয়। প্রতিবাদ করো। জানিনা এদিন আমরা কবে দেখতে পাবো। গ্রামীন বাংলাকে যদি দেখা যায় সেখানে মহিলারা কাঠের চুল্লির সামনে চুঙ্গিতে ফুল দিয়ে তিলে তিলে জীবনীশক্তি ক্ষয় করছে। তার স্বামী সন্তানের মঙ্গল কামনায় সপ্তাহে দু’দিন উপোস করছে। প্রতিদানে চপেটাঘাত তো পাচ্ছেই অনেক সময় মারের চোটে জীবনটাই চলে যাচ্ছে। অনেকে যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে বিষ খেয়ে বা অন্য উপায়ে আত্মহত্যা করছে। কোনো পুলিশ রেকর্ড হয় না অধিকাংশ ক্ষেত্রে। গ্রাম প্রধান বা অন্যান্য দন্ডমুন্ডের কর্তারা অনেক সময় টাকার বিনিময়ে অনেক সময় বিষয়টাকে গুরুত্ব না দিয়ে ঘটনাটি চেপে যান। কখনো পুলিশ অবধি পৌঁছলেও ডায়েরী নেওয়া হয় না। আসলে ব্যাপারটিকে ধর্তব্যের মধ্যেই রাখা হয় না।
মধ্যবিত্ত সমাজে বিশেষ করে আমাদের বাঙলী মধ্যবিত্ত সমাজে এখন লেগেছে কিছু প্রগতির ছোঁয়া। এই মিডলক্লাস সাধারণত কম্প্রোমাইজ করে না। ব্যতিক্রম নিশ্চয়ই আছে। সমাজ কি ভাববে ভেবে নিজের সুন্দর জীবনকে নিজেরাই টুঁটি টিপে মেরে ফেলে। কিন্তু সব মেয়েদেরই জন্য বলি, তাদের বক্তব্য হোক আমি কারোর জন্য বাঁচবো না। আমি নিজের জন্য বাঁচবো। মনে রাখবে হিলারী ক্লিন্টনের এই কথা গুলি, “Women are the largest untapped reservoir of talent in the world.”
Be the first to comment