সংসদে হাউহাউ করে কাঁদলেন রূপা

Spread the love

সংসদেও পৌঁছল বগটুই কান্ডের আঁচ। গত সোমবার বীরভূমের রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে রাতের অন্ধকারে বাড়িতে পুড়ে মৃত্যু হয় আটজনের। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই উত্তাল হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। আজই সিবিআই(CBI)-র হাতে গোটা ঘটনার তদন্তভার তুলে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।

এদিকে, এদিন সংসদে বগটুই কান্ড নিয়ে কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন বিজেপি সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। কাঁদতে কাঁদতেই তিনি রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থার উপরে অনাস্থা প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি করেন।

শুক্রবার অধিবেশন শুরুর আগেই জিরো আওয়ারে বগটুই কান্ড নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ। রাজ্যসভায় জিরো আওয়ার শুরু হতেই বক্তব্য রাখতে ওঠেন রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। রামপুরহাটের বগটুইয়ের নির্মম হত্যাকান্ডের বিস্তারিত বিবরণ দেন বিজেপি নেত্রী। কীভাবে গ্রামের মহিলা ও শিশুরা পাশবিক অত্যাাচারের শিকার হয়েছে এবং গ্রামবাসীরা ভয়ে পালিয়ে যাচ্ছেন, তা তুলে ধরেন তিনি। এরপরই রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি করেন।

কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ ভারতের অংশ। আমাদের রাষ্ট্রপতি শাসন চাই। পশ্চিমবঙ্গে জন্ম গ্রহণ করা কোনও অপরাধ নয়। দক্ষিণেশ্বর মা কালীর ভূমি, এখানে জন্মগ্রহণ করা কোনও অপরাধ নয়। এই রাজ্য বর্তমানে বসবাসের যোগ্য নয়।”
তিনি আরও বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে মানুষ কথা বলতে, মত প্রকাশ করতে পারেন না। সরকার খুনিদের সুরক্ষা দিচ্ছে। এমন কোনও রাজ্য নেই যেখানে নির্বাচনে জয়ের পর সাধারণ মানুষকে খুন করা হয়। আমরাও মানুষ। আমাদের হৃদয় পাথরের নয়, এভাবে আমরা রাজনীতি করতে পারি না।”

অন্যদিকে, লোকসভাতেও বগটুই কান্ড নিয়ে সরব হন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “বীরভূমের বগটুই গ্রামে ১০-১৫ জন মহিলা ও শিশুদের ঘরে দরজা বন্ধ করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। মেয়েদের পুড়িয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী তারপরে ঘটনাস্থানে গিয়েছেন, সেখানে গিয়ে টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন, যাতে সত্যিটা বেরিয়ে না আসে। রাজ্যের মানুষ চেয়েছিলেন সিবিআই তদন্ত করুক, আজ হাইকোর্ট সেই নির্দেশই দিয়েছে। আমি মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করব তিনি যেন রাজ্যবাসীর টাকা খরচ করে সুপ্রিম কোর্টে সিবিআই তদন্তের রায়কে চ্যালেঞ্জ না করেন।”

সোমবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ খুন হন বগটুইয়ের পঞ্চায়েত উপ প্রধান ভাদু শেখ। এর এক ঘণ্টার মধ্যেই গ্রামের একাধিক বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। অভিযোগ, বাড়ির দরজায় তালা দিয়ে বাসিন্দাদের ঘরের ভিতরে আটকে রেখে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার তদন্তে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিট গঠন করেছেন। অন্যদিকে, আজ সকালেই কলকাতা হাইকোর্টের তরফে ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*