রুজিরা-মেনকা মামলায় কেন্দ্রকে ভর্ৎসনা কলকাতা হাইকোর্টের

Spread the love

রুজিরা- মেনকা মামলায় এবার কেন্দ্রীয় সরকারের তদন্তে প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাইকোর্ট। বারবার দুজন সম্ভ্রান্ত মহিলাকে নানা কারণে হয়রান করা, দুবছর ধরে তদন্ত করেও মামলার নিস্পত্তি না করতে পারার ঘটনায় এবার রুজিরা- মেনকা মামলায় কেন্দ্রীয় সরকারের দিকেই আঙুল তুলল আদালত। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা নারেলা এবং শ্যালিকা মেনকা গম্ভীরকে সোনা পাচার সংক্রান্ত অভিযোগের ভিত্তিতে দায়ের হওয়া মামলায় কেন বারবার হয়রান করা হচ্ছে প্রশ্ন তুলে সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের শুল্ক দফতরের আইনজীবীকে তীব্র ভর্ৎসনা করে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। দু’বছর ধরে সোনা পাচার সংক্রান্ত মামলার তদন্ত চলছে। তার পরেও এই দু’জনকে কেন হয়রান করা হচ্ছে তা জানতে চান বিচারপতি।

প্রসঙ্গত ২০১৯ সালের ১৬ মার্চ রুজিরা নারেলা এবং মেনকা গম্ভীর ব্যাংকক থেকে ফিরছিলেন। সেই সময় সোনা পাচারের অভিযোগ তুলে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয় কেন্দ্রীয় সরকারের শুল্ক দফতরের তরফে । শুরু হয় তদন্ত। রুজিরা নারেলা এবং মেনকা গম্ভীর দুজনেই বারবার বলেছেন তাঁরা এই ব্যাপারে কিছুই জানেন না। তবুও নানা ভাবে তাঁদের হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। তদন্তের নামে তাঁদের জীবনযাত্রায় নানা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার ঘটনাও প্রত্যক্ষ করেছেন আমজনতা। এবার তদন্তকারীদের কাছেই জবাবদিহি চাইল হাইকোর্ট। কেন্দ্রীয় সরকারের শুল্ক দফতরের আইনজীবীর উদ্দ্যেশে ডিভিশন বেঞ্চের তরফে বিস্ময় প্রকাশ করে বলা হয় “দুবছর ধরে তদন্ত চলছে, এখনও শেষ হল না!” শুক্রবার মামলাটি শুনানির জন্য উঠলে কেন্দ্রীয় সরকারের এক আইনজীবী জানান, দিল্লি থেকে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল আসতে পারেননি। অন্য মামলায় আটকে গিয়েছেন। তাই এই মামলা কয়েক দিন পিছিয়ে দেওয়া হোক। আগামী ডিসেম্বর মাসে মামলাটি শুনানির জন্য উঠবে। এরপরই কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবীকে তীব্র ভর্ৎসনা করে আদালত। এর আগেই শুল্ক দফতরের তরফ থেকে আনা অভিযোগের বিরোধিতা করে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন রুজিরা নারেলা এবং মেনকা গম্ভীর। তাঁদের পক্ষেই রায় দেয় সিঙ্গল বেঞ্চ । এরপর সেই রায়কেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের করে শুল্ক দফতর। ২০২০ সাল থেকেই হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে চলছে এই মামলা। এবার ধৈর্যের বাঁধ ভাঙল আদালতেরও। তদন্ত করে যখন কোনও প্রমাণ বা তথ্য পাওয়া যাচ্ছেই না তাহলে শুধু শুধু দুজন মহিলাকে এভাবে বিব্রত করার মধ্যে রাজনৈতিক আক্রোশের ছায়া দেখছে রাজনৈতিক মহল। যেভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় সরকারের দুর্নীতি আর বাংলার প্রতি বঞ্চনা নিয়ে সরব হচ্ছেন, সেখানে দাঁড়িয়ে নানা কেন্দ্রীয় সংস্থা দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজেদের আক্রোশ মেটানোর চেষ্টা করছে বিজেপি সরকার, এমনটাই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*