রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। যদি এখনই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আনার চেষ্টা করা হয়, তাহলে অবস্থা আরও সঙ্কটজনক হতে পারে। এমনটাই বলা হল ভারতের তরফে। ইতিমধ্যেই ইউক্রেনে মিলিটারি অপারেশন চালানো হবে বলে ঘোষণা করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আর ভারতের দাবি, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সামরিক সংঘাত বাড়লে ধাক্কা খাবে শান্তি ও নিরাপত্তা। রাষ্ট্রসঙ্ঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টিএস ত্রিমূর্তি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘বড়সড় সঙ্কট তৈরি করতে চলেছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের পরিস্থিতি।’
রাষ্ট্রসঙ্ঘে ত্রিমূর্তি বলেন, ‘পরিস্থিতি বিপজ্জনক। তৈরি হতে পারে বড়সড় সঙ্কট। বিঘ্নিত হতে পারে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও শান্তি।’ দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। পরিস্থিতি যাতে আরও খারাপের দিকে না যায়, সে বিষয়েও বার্তা দিয়েছে ভারত।
শান্তি বজায় রাখা কতটা জরুরি সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে ত্রিমূর্তি উল্লেখ করেছেন, কূটনৈতিক স্তরে আলোচনার মাধ্যমেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা প্রয়োজন। তিনি আরও জানিয়েছেন, ভারতীয় নাগরিকদের ইউক্রেন থেকে অবিলম্বে দেশে ফেরাতে সাহায্য করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যেই দুটি এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান ভারতে ফিরেছে নাগরিকদের নিয়ে। তবে এখনও কয়েক হাজার ভারতীয় ইউক্রেনে আটকে রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। সোমবারই রাষ্ট্রপুঞ্জের বৈঠকে ভারতের তরফে জানানো হয়েছে, সীমান্তবর্তী এলাকা সহ ইউক্রেনে প্রায় ২০ হাজার ভারতীয় নাগরিক রয়েছেন বর্তমানে। এদের মধ্যে বেশির ভাগই পড়ুয়া। তাঁদের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তাই ভারতের কাছে অগ্রাধিকার পাবে বলেও জানানো হয়েছে।
গত সপ্তাহেই বিদেশমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, ইউক্রেনের সঙ্গে এয়ার বাবল চুক্তি শিথিল করা হয়েছে। দেশের উড়ান সংস্থাগুলি চাহিদা অনুযায়ী বিমানের ব্যবস্থাও করতে পারে। ইউক্রেনে বসবাসকারী ভারতীয়দেরও চার্টার্ড বা যাত্রীবাহী সাধারণ বিমানে দ্রুত দেশে ফিরে আসার অনুরোেধ জানানো হয়েছে। সাহায্যের জন্য বিদেশমন্ত্রকের তরফে একটি বিশেষ কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়েছেে।
উল্লেখ্য বৃহস্পতিবার রাশিয়ার স্থানীয় সময় ভোর ৬টা নাগাদ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, ইউক্রেনে মিলিটারি অপারেশন চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাঁর এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে কার্যত বেজে গিয়েছে যুদ্ধের দামামা। পুতিন এও জানান যে, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ কোনওভাবেই এড়ানো সম্ভব নয়। সূত্রের খবর, ইউক্রেনের ডনবাসে ইতিমধ্যেই সেনা অভিযান শুরুও করে দিয়েছে মস্কো। জায়গায় জায়গায় চলছে মিসাইল হামলা। ইউক্রেনের সমস্ত বিমান পরিষেবাও বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। বিপর্যস্ত হয়েছে মোবাইল সংযোগ ব্যবস্থাও।
Be the first to comment