রাষ্ট্রসঙ্ঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দেয়নি ভারত। কূটনৈতিক স্বার্থেই সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলে জানা যায়। কিন্তু আন্তর্জাতিক আদালতে ভারতের ভিন্ন অবস্থান দেখা গেল। ভারতীয় বিচারপতি ভোট দিলেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে। যদিও এর সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক অবস্থানের কোনও সম্পর্ক নেই বলে জানা গিয়েছে। বুধবার ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস বা আন্তর্জাতিক আদালত রাশিয়াকে যুদ্ধ বন্ধ করার যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাতে সায় ছিল ভারতীয় বিচারপতি দলবীর ভান্ডারীর। মোট ১৩ জন বিচারপতি ভোট দিয়েছেন যুদ্ধ বা রাশিয়ার সামরিক অভিযান বন্ধ করার পক্ষে। আর সেই ভোটের ভিত্তিতেই অভিযান বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
ভোটাভুটির ফল হয়েছে ১৩-২। ১৫ জন বিচারপতির বেঞ্চে শুনানি হয়েছিল। যুদ্ধ থামানোর সিদ্ধান্তে সায় দিয়েছেন ১৩ জন বিচারপতি। তাঁদের মধ্যেই রয়েছেন ভারতীয় বিচারপতি, বিচারপতি দলবীর ভাণ্ডারী।
যাঁরা পক্ষে ভোট দিয়েছেন, তাঁরা হলেন, বিচারপতি জোয়ান ই দনঘ (আমেরিকা), বিচারপতি পিটার তোমকা (স্লোভাকিয়া), বিচারপতি রনি আব্রাহাম (ফ্রান্স), বিচারপতি মহম্মদ বোনৌনা (মরক্কো), বিচারপতি আব্দুলাকায়ি আহমেদ ইউসুফ (সোমালিয়া), বিচারপতি জুলিয়া সেবুটিন্ডে (উগান্ডা), বিচারপতি দলবীর ভাণ্ডারী (ভারত), বিচারপতি প্যাট্রিক লিপটন রবিনসন (জামাইকা), বিচারপতি নওয়াফ সালাম (লেবানন), বিচারপতি ইউয়াসাওয়া ইউজি (জাপান), বিচারপতি জর্জ নোলটে (জার্মানি), বিচারপতি হিলারি চার্লসওয়ার্থ (অস্ট্রেলিয়া) ও বিচারপতি অ্যাড হক ডৌডেট।
আন্তর্জাতিক আদালতে দ্বিতীয়বারের জন্য বিচারপতি হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন দলবীর ভান্ডারী। ২০১২-তে প্রথমবার আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারপতি হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। ২০১৮ তে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ফের শুরু হয় তাঁর দ্বিতীয় টার্ম। ভারত সরকারের সুপারিশেই এই দায়িত্ব পান তিনি। ইউকের প্রতিনিধি বিচারপতি গ্রীনউডকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয়বার জায়গা করে নেন তিনি।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের যে পুরনো বন্ধুত্ব রয়েছে, তা অটুট রাখতে চায় কেন্দ্র। এর আগে রাষ্ট্রসঙ্ঘে একাধিক ইস্যুতে ভেটো বা মতদানের ক্ষেত্রে রাশিয়া বরাবর ছিল ভারতের পক্ষে। আমেরিকার সঙ্গেও বিগত কয়েক বছরে ভারতের সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে। ইউক্রেন-রাশিয়ার সংঘাত রাশিয়া ও আমেরিকার অবস্থান দুই মেরুতে। এ ক্ষেত্রে ভারত নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রেখেছে। যেহেতু আমেরিকা ইউক্রেনকে সমর্থন করছে, তার জেরে ভারত দুটি দেশের মধ্যে যার পক্ষই নেবে, অপর পক্ষের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হবে।
Be the first to comment