১২ বছরের এক কিশোরীকে মঙ্গলবার সকালে সবরীমালা মন্দিরে যাওয়ার পথে আটকালো পুলিশ ৷ পরিবারের সঙ্গে পুজো দিতে এসেছিল সে ৷ পরিবারের তরফে পুলিশকে একাধিক বার অনুরোধ করা হয় ৷ কিন্তু কিশোরীকে বেস ক্যাম্পে রেখে পরিবারের বাকিদের মন্দিরে যেতে হবে বলে জানায় কেরালা পুলিশ ৷
মঙ্গলবার সকাল ১০ টা নাগাদ পাম্বার বেস ক্যাম্পে পৌঁছায় কিশোরী ও তাঁর পরিবার ৷ পরিচয়পত্র হিসেবে তাঁদের আধার কার্ড দেখতে চায় পুলিশ ৷ আধার কার্ডে কিশোরীর বয়স দেখার পর পুলিশ জানায় কিশোরীকে বেস ক্যাম্পে থাকতে হবে। মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া হবে না। তবে তার পরিবারের বাকিরা মন্দিরের উদ্দেশে রওনা দিতে পারবেন ৷ একথা শোনার পর কান্নায় ভেঙে পড়ে ওই কিশোরী ৷
১৫ নভেম্বর অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে আসা ১০ মহিলা দর্শনার্থীকেও সবরীমালা মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তাঁদের বেসক্যাম্প থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় ৷ ওইদিন বিকেলেই ৪১ দিনের বার্ষিক তীর্থযাত্রার জন্য খোলা হয় মন্দির ৷ গত বছর সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল যে, সবরীমালা মন্দিরে ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সী মহিলাদের ঢুকতে কোনও বাধা নেই। কিন্তু তারপরেও চলতি বছরের ১৪ নভেম্বর কেরালা সরকার জানায়, মন্দির আন্দোলনের জায়গা নয় ৷
১০ থেকে ৫০ বছর বয়সী মহিলারা মন্দিরে ঢুকতে চাইলে তাঁদের কোনওরকম সুরক্ষা দেবে না রাজ্য প্রশাসন ৷ কেরালার দেবস্বম বোর্ডের মন্ত্রী কাদাকম্পলি সুরেন্দ্রন বলেন, মন্দির প্রাঙ্গণে আসতে ইচ্ছুক মহিলাদের আদালতের অনুমতিপত্র আনতে হবে ৷ সবরীমালা মন্দির কোনও আন্দোলনের জায়গা নয় ৷ ত্রুপ্তি দেশাইয়ের মতো সমাজকর্মীদের ক্ষমতা প্রদর্শনের জায়গা নয় এই মন্দির প্রাঙ্গণ ৷
শতাব্দী প্রাচীন প্রথা অনুযায়ী সবরীমালা মন্দিরে রজঃস্বলা মহিলাদের (১০-৫০ বছরের) প্রবেশাধিকার ছিল না ৷ কিন্তু গতবছর সুপ্রিম কোর্ট জানায় এই প্রথা লিঙ্গবৈষম্যকে সমর্থন করে ৷ শীর্ষ আদালত তার রায়ে মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশাধিকারের অনুমতি দেয়। সেই রায় পুনর্বিবেচনার দাবিতে একাধিক আবেদন জমা পড়ে সুপ্রিম কোর্টে ৷ ১৪ নভেম্বর শীর্ষ আদালতের ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ আবেদনগুলি ৭ সদস্যের বেঞ্চে পাঠিয়ে দেয় ৷ তবে মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশাধিকারের অনুমতি দিয়ে গত বছর সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছিল, তাতে 5 সদস্যের বেঞ্চ কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি।
Be the first to comment