হনুমানের জাতপাত নিয়ে এবার বিতর্কিত মন্তব্য করলেন বিজেপির সাংসদ সাবিত্রী বাই ফুলে। তিনি বলেন, হনুমান ছিলেন দলিত। তাঁকে মনুবাদীদের দাসত্ব করতে হয়েছিল।
গত সপ্তাহে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ রাজস্থানের আলোয়ারে ভোটের প্রচারে গিয়ে বলেন, হনুমান ছিলেন বনবাসী, দলিত ও পশ্চাৎপদ। তিনি উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম, ভারতকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন।
এই মন্তব্য নিয়ে নানা মহলে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। রাজস্থান সর্ব ব্রাহ্মণ মহাসভা নামে এক সংগঠন যোগীকে আইনি নোটিস পাঠায়। তাদের অভিযোগ, ভোটের জন্য উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হনুমানের জাতপাতের কথা তুলছেন। অন্যদিকে ভীম সেনা নামে এক সংগঠনের প্রধান চন্দ্রশেখর বলেন, এবার দেশের সবক’টি হনুমান মন্দিরের দখল নেবে দলিতরা। সেখানে দলিত পুরোহিত নিয়োগ করা হবে। ন্যাশনাল কমিশন ফর শিডিউলড ট্রাইবসের চেয়ারম্যান নন্দকুমার সাই বলেন, হনুমান দলিত নন, আদিবাসী। আমি নিজে আদিবাসী হিসাবে বলছি, আমরা হনুমানকে খুব সম্মান করি। আদিবাসীদের মধ্যে ‘বানর’ এক সম্মানিত গোত্র। জ্যোতির্মঠ (উত্তরাখণ্ড)-এর শংকরাচার্য স্বামী স্বরূপানন্দ সরস্বতীও যোগীর মন্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, তিনি মূর্খ ও পাপী।
এর মধ্যে মঙ্গলবার বাহরাইচের সাংসদ সাবিত্রীবাই ফুলে বলেন, হনুমান ছিলেন মানুষ এবং দলিত। তিনি রামের জন্য কাজ করেছেন। কিন্তু তাঁর মুখ কালো করে দেওয়া হয়েছে কেন? তাঁর মূর্তিতে লেজই বা লাগানো হয় কেন? তিনি রামভক্ত ছিলেন। তাঁকে মানুষ হিসাবে না দেখিয়ে বানর হিসাবে দেখানো হয় কেন? দলিত বলে এখনও তাঁকে অসম্মানের শিকার হতে হচ্ছে। দলিতদের এখনও মানুষ হিসাবে গণ্য করা হয় না কেন?
রামমন্দির নিয়ে বিজেপির সমালোচনা করেন ফুলে। তাঁর কথায়, ভোটের বছরে বিজেপির সামনে আর কোনও ইস্যু নেই। তাই তারা রামমন্দিরের কথা বলছে। তাঁর কথায়, এখন দেশে আর মন্দির দরকার নেই। রামমন্দির তৈরি হলে কি বেকারত্ব কমে যাবে? দলিতদের সমস্যার সমাধান হবে।
এর আগেও দলের বিরুদ্ধে একাধিকবার মন্তব্য করেছিলেন ফুলে। তাতে অস্বস্তিতে পড়েছে দল। তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন, বিজেপি নেতারা দলিতদের বাড়িতে নৈশভোজ করেন কেন? আর একবার পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মহম্মদ আলি জিন্নাকে বলেছিলেন, ‘মহাপুরুষ’ ।
ফুলের মন্তব্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে বিজেপির মুখপাত্র চন্দ্রমোহন বলেন, মনে হচ্ছে তিনি ভারতীয় সংস্কৃতি সম্পর্কে কিছু জানেন না।
Be the first to comment