বিদ্রোহের শাস্তি দেওয়া হল কংগ্রেসের যুবা নেতা সচিন পাইলটকে। রাজস্থানে চলা রাজনৈতিক অস্থিরতার মাঝেই তাঁর পদ কেড়ে নিল কংগ্রেস। উপ মুখ্যমন্ত্রী, প্রদেশ সভাপতি-দুটি পদ থেকেই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সচিনের সমর্থনে বিদ্রোহে যোগ দেওয়া আরও দু জন মন্ত্রীকেও তাঁদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। গোবিন্দ সিং-কে রাজস্থান কংগ্রেসের নতুন প্রদেশ সভাপতি করা হয়েছে। এ দিকে, এদিনই রাজস্থানের রাজ্যপাল কালরাজের সঙ্গে দেখা করেছেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট।
সচিন পাইলট গেহলট সরকার ফেলার ষড়যন্ত্রে সামিল হয়েছেন। মঙ্গলবার এমনই অভিযোগ করেছেম কংগ্রেসের মুখ্য মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা। রাজস্থানে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে তাঁকে আর দলের আর এক শীর্ষ নেতা অজয় মাকেনকে মরুরাজ্যে পাঠিয়েছিল হাইকম্যান্ড। নিজের অবস্থান থেকে সরে এসে ফের দলীয় শৃঙ্খলা মানার জন্য সচিনকে দু বার সময় দিয়েছিল কংগ্রেস। এ দিন দলের তরফে বলা হয়েছে, রাজস্থানে সরকার ফেলতে বিজেপির পাতা ফাঁদে পা দিয়েছেন সচিন।
রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট তাঁকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করছেন, এই অভিযোগে দলে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন সচিন পাইলট। শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে নালিশ জানাতে দিল্লিতে যান তিনি। তাঁর সমর্থনে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন কয়েকজন বিধায়কও। এরপরই মরুরাজ্যে সরকার পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। তড়িঘড়ি পরিষদীয় দলের বৈঠক ডেকে সংখ্যা খতিয়ে দেখে নেন গেহলট। হুইপ জারি করে সব কংগ্রেস বিধায়কদের সেই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়। উপযুক্ত কারণ ছাড়া উপস্থিত না-থাকলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছিল শীর্ষ নেতৃত্ব।
তবে সেই বৈঠকে যোগ দেননি সচিন। এরপর ফের তাঁকে বৈঠকে যোগ দেওয়ার দ্বিতীয় সুযোগ দেওয়া হয়। কংগ্রেসের তরফে বলা হয়েছিল, আগে সচিন বৈঠকে যোগ দিন, তারপর তাঁর সঙ্গে আলোচনায় বসা হবে। তাঁর অভিযোগ শোনা হবে। তবে সেই বৈঠকেও হাজির হননি রাজস্থানের যুবা নেতা। এরপর মঙ্গলবার তাঁকে উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কংগ্রেস। প্রদেশ সভাপতির পদও কেড়ে নেওয়া হয় সচিনের থেকে।
সোমবার দিনভর রাজস্থান নিয়ে চলে একের পর এক দৃশ্য-বদল। নিজের অনুগত ১০৭ জন বিধায়ককে নিয়ে রিসর্টে সিঁধোন গেহলট স্বয়ং! অন্যদিকে, সোমবার লোকচক্ষুর আড়ালে হরিয়ানার রিসর্টে দিনভর গোপন বৈঠক করেন সচিন পাইলট। সোমবার রাত অবধিও স্পষ্ট হয়নি কংগ্রেসের ‘ঘরের ছেলে’ সচিন পাইলট কি আদৌ ঘরে ফিরছেন, নাকি গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়ে খাদের মুখে দাঁড় করাচ্ছেন অশোক গেহলটের সরকারকে! বর্তমান পরিস্থিতিতে সচিন বিজেপিতে যোগ দেন কি না, সেটাই দেখার। যদিও সোমবার তিনি জানিয়েছিলেন যে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন না।
Be the first to comment