‘দেশদ্রোহী’ তকমা পেলেন ঔরঙ্গাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের কাউন্সিলার সৈয়দ মতিন, কেন জানেন!

Spread the love
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর মৃত্যুতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিলেন। ফলে কপালে জুটল বেধড়ক মার। শুধু তাই নয়, ‘দেশদ্রোহী’ তকমাও পেলেন ঔরঙ্গাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের কাউন্সিলার সৈয়দ মতিন।
ঘটনাটি ঘটে ঔরঙ্গাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের জেনারেল বডি মিটিংয়ের সময়। শুক্রবার মিটিংয়ের আগে বিজেপি কাউন্সিলার রাজু বৈদ্য প্রস্তাব রাখেন, অটল বিহারী বাজপেয়ীর স্মরণে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে তারপর মিটিংয়ের কাজ-কর্ম শুরু হোক। এই ঘটনার বিরোধিতা করেন অল ইন্ডিয়া মজলিশ-এ-ইত্তেহাদ-উল মুসলিমেন (এআইএমআইএম)-এর সদস্য ও কাউন্সিলার সৈয়দ মতিন।
ব্যস, এই কথা শুনেই তাঁর দিকে তেড়ে যান সেখানে উপস্থিত ১০-১২ জন বিজেপি কাউন্সিলার। তাঁদের মধ্যে মহিলাও ছিলেন বলে খবর। মতিনকে তাঁর সিট থেকে টেনে বের করে শুরু হয় চর-ঘুঁষি-লাথির পালা। মারের চোটে মাটিতে পড়ে যান মতিন। তাও মার থামেনি বলে জানা গিয়েছে। সেখানে উপস্থিত কিছু কাউন্সিলার মতিনকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। ছুটে যান সিকিউরিটি গার্ডরা। তাঁরা মতিনকে পেছনের দরজা দিয়ে বের করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
পুরো ঘটনার ভিডিও মুহূর্তের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। তারপরেই ঔরঙ্গাবাদ মিউনিসিপ্যালিটির বাইরে বেশ কিছু অল ইন্ডিয়া মজলিশ-এ-ইত্তেহাদ-উল মুসলিমেন সমর্থক জড়ো হয়ে এই ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করে। তারা পাথর ছুড়ে বিজেপি নেতা বাবুরাও দেশমুখের গাড়ি ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ। এমনকী এই ঘটনায় বাবুরাও-এর গাড়ির ড্রাইভারও আহত হয়েছেন বলে খবর।
অল ইন্ডিয়া মজলিশ-এ-ইত্তেহাদ-উল মুসলিমেনের বিধায়ক ইমতিয়াজ জলিল বলেন, ঔরঙ্গাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনে তাঁদের ২৫ জন কাউন্সিলার রয়েছেন। কিন্তু বাজপেয়ীর শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের বিরোধিতা একমাত্র করেছেন মতিন। বাকিরা তাতে সম্মতি জানাননি। তাহলে বোঝা যাচ্ছে এতে দলের কোনও সম্মতি নেই। মতিন যেটা করেছে সেটা পুরোপুরি তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। তবে এই সিদ্ধান্তর নিন্দা করছেন তাঁরা। মতিনের বিরুদ্ধে দলীয় তদন্ত হবে বলে জানান জলিল। তবে যেভাবে মতিনকে মারা হয়েছে, তারও নিন্দা করেন এই বিধায়ক।
অন্যদিকে বিজেপি কাউন্সিলারদের বক্তব্য, এই প্রথমবার নয়, এর আগেও দেশদ্রোহী মন্তব্য করেছেন মতিন। কর্পোরেশনের মধ্যে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ারও বিরোধিতা করেছিলেন এই অল ইন্ডিয়া মজলিশ-এ-ইত্তেহাদ-উল মুসলিমেনের কাউন্সিলার। সৈয়দ মতিনের বারবার এই ধরণের কর্মকাণ্ডে রেগে গিয়েই তাঁরা এই কাজ করেছেন বলে জানিয়েছেন। এমনকী বিজেপি নেতাদের তরফে মতিনের বিরুদ্ধে ‘দেশদ্রোহী’ মন্তব্যের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে পুলিশের কাছে। বিজেপি কাউন্সিলাররা পুরসভার সিভিক বডি থেকে মতিনকে বরখাস্ত করারও দাবি জানিয়েছেন।
পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। হাসপাতালে ভর্তি মতিনের সুরক্ষার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। ঔরঙ্গাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনেরও ভেতর-বাইরে বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেটিং।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*