সোমবারই প্রবীণ কংগ্রেস নেতা সজ্জন কুমারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। মঙ্গলবার দলের সভাপতি রাহুল গান্ধীকে চিঠি লিখে সজ্জন কুমার জানালেন, তিনি ইস্তফা দিতে চান।
পাঁচ রাজ্যে নির্বাচনে ভালো ফলের পরে কংগ্রেস শিবিরে যে উল্লাস দেখা গিয়েছিল, শিখ দাঙ্গা নিয়ে রায়ের পরে ঝিমিয়ে গিয়েছে অনেকখানি। বিজেপি বলেছে, এতদিনে পাপের শাস্তি হল। কংগ্রেস বরাবর এই সব অপরাধীকে রক্ষা করে এসেছে। এই প্রসঙ্গে উঠে এসেছে আরও এক কংগ্রেস নেতার নাম। তিনি জগদীশ টাইটলার। অভিযোগ, শিখবিরোধী দাঙ্গায় তিনিও সজ্জন কুমারের মতোই অপরাধী। দলকে বিড়ম্বনার হাত থেকে বাঁচানোর জন্যই সজ্জন কুমার পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গিয়েছে।
তিনি চিঠিতে লিখেছেন, দিল্লি হাইকোর্টের রায় আমার বিপক্ষে গিয়েছে। আমি অবিলম্বে কংগ্রেসের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছি।
৭৩ বছরের সজ্জন কুমার প্রায় চার দশক ধরে কংগ্রেসের সদস্য। ১৯৭৭ সালে কাউন্সিলার নির্বাচনে তিনি প্রথম কংগ্রেসের প্রার্থী হিসাবে জয়লাভ করেন। আউটার দিল্লি লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রথম সাংসদ হন। পরপর দু’বার সেখান থেকে লোকসভা ভোটে জেতেন। ২০০৯ সালে বিজেপি জোরালো অভিযোগ করে, শিখ দাঙ্গায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে কংগ্রেস প্রার্থী করছে। সেবার কংগ্রেস তাঁকে টিকিট দেয়নি।
১৯৮৪ সালের ৩১ অক্টোবর শিখ দেহরক্ষীর গুলিতে নিহত হন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। অভিযোগ, সেদিন রাতেই সজ্জন কুমার ও আরও কয়েকজন কংগ্রেস নেতা স্থানীয় দুর্বৃত্তদের জড়ো করেন। তাদের হাতে অস্ত্রশস্ত্র দেন। মদের বোতল এবং ১০০ টাকার নোটও বিলি করা হয়।
১ নভেম্বর সকাল থেকে দিল্লি ও দেশের নানা প্রান্তে শুরু হয় শিখবিরোধী দাঙ্গা। দিল্লিতে প্রায় ৩ হাজার শিখ নিহত হন। তখন অনেকে সজ্জন কুমারকে উস্কানিমূলক ভাষণ দিতে দেখেছেন। তিনি বলছিলেন, যারা আমাদের নেত্রীকে হত্যা করেছে, তাদের একজনও যেন রেহাই না পায়। শিখদের খুন করার জন্য তিনি জনতার মধ্যে রড বিলি করছেন, এমনও দেখেছে অনেকে।
২০১৩ সালে নিম্ন আদালতের রায়ে সজ্জন কুমার রেহাই পান। কিন্তু সিবিআই সেই রায়ের বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন করে। হাইকোর্টে দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্তদের অনেকে সাক্ষ্য দেন। সজ্জন কুমার দু’টি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন। ১ নভেম্বর রাজনগর অঞ্চলে একই পরিবারের পাঁচ জনকে খুন করা হয়েছিল। একইদিনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল একটি গুরুদোয়ারা। সজ্জন কুমারের প্ররোচনায় উন্মত্ত জনতা ওই দু’টি অপরাধ করে।
Be the first to comment