সল্টলেক থেকে উদ্ধার পচাগলা দেহ, গ্রেপ্তার দুই

Spread the love

সল্টলেকের এ জে ব্লকের অভিজাত বাড়ি থেকে উদ্ধার এক ব্যক্তির দেহ৷ বৃহস্পতিবার একটি নিখোঁজ অভিযোগের ভিত্তিতে ওই বাড়িতে অভিযান চালায় বিধাননগর পূর্ব থানার গোয়েন্দারা৷ জানা গিয়েছে, তিনতলা বাড়ির ছাদ থেকে উদ্ধার হয় দেহটি৷ ওই রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, পচাগলা দেহটি নিখোঁজ যুবকেরই৷

পুলিশ সূত্রে খবর, কয়েকদিন আগে বিধাননগর পূর্ব থানায় বড় ছেলের নামে নিখোঁজ ডায়েরি করেন ব্যবাসায়ী অনিল কুমার মেহেনসারিয়া৷ পুলিশের কাছে তিনি দাবি করেন, যে তাঁর বড় ছেলে অর্জুন মেহেনসারিয়াকে খুন করেছেন তাঁর মা৷ এই অভিযোগের সাপেক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে পুলিশকে সমস্ত ঘটনার বিবরণ দেন ওই ব্যক্তি৷

জানা গিয়েছে, ১৯৮৮ সালে অনিলকুমার মেহেনসারিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় গীতার৷ গীতার বাবার বাড়ি রাঁচিতে৷ বিয়ের পর সল্টলেকের এ জে ব্লকের ২২৬ নম্বর বাড়িটিতে থাকতেন তাঁরা৷ বাড়িটি যদিও তাঁর স্ত্রী গীতার মালিকানাধীন। পরিবারে সদস্য বলতে মোট পাঁচজন৷ স্বামী-স্ত্রী ও তাঁদের তিন সন্তান৷ দুই ছেলে ও এক মেয়ে৷ বড় ছেলে ২৫ বছর বয়সী৷ ছোটো ছেলের নাম বিদুর মেহেনসারিয়া ও মেয়ে বৈদেহী৷

স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদের সূত্রপাত ২০১৯ সালে৷ বিবাদের জেরে ওই বছরই অগাস্ট মাসে এ জে ব্লকের বাড়ি ছেড়ে রাজারহাটের একটি আবাসনে একাই থাকতেই ওই ব্যক্তি৷ তিন ছেলে-মেয়ে থাকত মায়ের সঙ্গেই সল্টলেকে৷ পুলিশ সূত্রে খবর, ২৯ অক্টোবর অনিলকুমার মেহেনসারিয়া জানতে পারেন ছেলে-মেয়েদের নিয়ে বাবার বাড়ি গিয়েছেন গীতা৷

সূত্রের খবর, গীতার সঙ্গে ফোনেও কথা হয় অনিলের৷ গীতা সেই ফোন কথোপকথনে জানান তাঁদের বড় ছেলে অর্জুনও বর্তমানে কর্মসূত্রে রাঁচিতে রয়েছে৷ কিন্তু বহু চেষ্টা করেও ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি অনিল৷ তারপরই সন্দেহের সূত্রপাত৷ কয়েকমাস আগে বিধাননগর পূর্ব থানায় একটি নিখোঁজ অভিযোগ দায়ের করেন অনিল এবং তিনি দাবি করেন অর্জুনকে খুন করা হয়েছে এবং খুন করেছেন তাঁর স্ত্রী গীতাই৷

এই অভিযোগের পরই গতকাল এজে ব্লকের ২২৬ নম্বর বাড়িটিতে অভিযান চালাই পুলিশ৷
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় কয়েকমাস ধরেই বন্ধ ছিল বাড়িটি৷ বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ির সদর দরজার তালা ভেঙে বাড়ির ভিতরে ঢোকে পুলিশ৷ তিনতলার ছাদ থেকে উদ্ধার হয় দেহটি৷ রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা৷ বিধাননগর থানার গোয়েন্দা বিভাগের এক আধিকারিক সূত্রে খবর, দেহের পাশাপাশি বাড়ির একতলার মেঝেতে একটি পোড়া দাগও মিলেছে৷ ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারনা সাধারণত এই ধরণের দাগ মূলত যজ্ঞ করা থেকে হতে পারে৷ দেহটি উদ্ধার করে পাঠানো হয় ময়নাতদন্তের জন্য৷

ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে গীতা ও বিদুর মেহেনসারিয়াকে৷ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ৷

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*