
রোজদিন ডেস্ক, কলকাতা:- আদ্যোপান্ত যাকে বলে ভ্রমণপ্রিয় বাঙালি ঠিক তেমনটাই ছিলেন বেহালার বাসিন্দা সমীর গুহ। ‘বছরে বেশ কয়েকবার ঘুরতে যেতেন সপরিবারে। তেমনি মেয়ের আইএসসি ক্লাস টুয়েলভের পরীক্ষা শেষ হতেই কাশ্মীর ভ্রমণের প্ল্যান করেন। সেই মতোই স্বপ্নের ভূস্বর্গে সপরিবারে ঘুড়তে গিছিলেন সমীরবাবু। কিন্তু, সেই স্বপ্নের জায়গায় গিয়ে শেষ হয়ে গেল সব স্বপ্নই।
এমনিতে ছিলেন মিষ্টভাষী, অমায়িক ও ভদ্র। তাঁর সঙ্গে এমনটা হয়েছে, এখনও ভাবতে পারছি না।’ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী সমীর গুহর কথা বলতে বলতেই মনখারাপে ভেঙে পড়েছিলেন তাঁর প্রতিবেশী ফ্ল্যাটের বাসিন্দা। প্রতিবেশীর কথায়, দিদিকে খবরটা পেয়েই ফোন করেছিলাম গতকাল। কিন্তু কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে নেই। শুধু হাউ হাউ করে কান্না।’
ওই প্রতিবেশির জানান, ‘দাদার মেয়ে খুব মিশুকে আর ওর বাবার খুব কাছের। সবসময় দাদার জন্মদিনে আগে থেকে প্ল্যান করত নতুন কী করা যায়। যেমনটা প্রত্যেক বাবার জন্য মেয়েরা করে থাকে সাধারণত। সেই তাকেই এই বয়সে চোখের সামনে বাবার মৃত্যু দেখতে হল। এই ঘটনা সারাজীবনের মতো দাগ কেটে গেল সদ্য আইএসসি ক্লাস টুয়েলভের পরীক্ষা দেওয়া ছোট্টো মেয়েটার মনে। কে নেবে এর দায়ভার?’
ফ্ল্যাটে থাকলেও তথাকথিত ফ্ল্যাট কালচার ছিল না সমীরবাবুর ঠিকানায়। ফ্ল্যাটের সকলেই সকলের সঙ্গে মিলে মিশে থাকতেন তিনি, যেন একটা একান্নবর্তী পরিবার। সেই পরিবারেই আচমকা এমন অন্ধকার নেমে আসবে, ভাবতে পারেননি আবাসনের কেউই। আরেক প্রতিবেশী কথায়, ‘দাদা ভীষণ ভালো মানুষ ছিলেন। ভালো লাগার মধ্যে শুধু ঘুরতে যেতে পছন্দ করতেন খুব। অনেকদিন ধরেই ওঁরা বলছিলেন, এবার কাশ্মীরটা ঘুরে এলে হয়। শেষমেশ সেইমাফিক প্ল্যানও করেছিলেন। কিন্তু কাশ্মীরই এত অন্ধকার এনে দিল একটা পরিবারে সে আর কে জানত’।
Be the first to comment