প্রয়াত হলেন প্রাক্তন গোলরক্ষক সনৎ শেঠ। ১৯৪৯ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত তেকাঠির নীচে যেকোনও দলের বড় ভরসা ছিলেন তিনি ৷ ভারতের হয়েও ১৯৫৪ সালে ম্যানিলা এশিয়ান গেমসে প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি ৷ যদিও দলের হয়ে মাঠে নামার সুযোগ হয়নি তাঁর ৷ মৃত্যুকালে এই বর্ষীয়ান খেলোয়াড়ের বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। রেখে গেলেন ছেলে, বৌমা দুই নাতনিকে। শুক্রবার সকাল ১০:৪০ মিনিটে নিজের পানিহাটির বাড়িতে প্রয়াত হন এই প্রক্তন গোলরক্ষক। কিছুদিন আগেই স্ত্রীকে হারান তিনি। তারপর থেকেই শরীর আরও বেশি খারাপ হতে শুরু করে তাঁর। এছাড়া দীর্ঘ দিন বার্ধক্যজনিত সমস্যাতেও ভুগছিলেন সনৎ।
একসময়ে ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, এরিয়ান, বিএনআরের হয়ে দাপিয়ে খেলেছেন তিনি। কলকাতার দুই বড় দলে খেলা যখন ফুটবলারদের কাছে গর্বের বিষয়, তখন সনৎবাবুর মনজুড়ে শুধুই এরিয়ান ও রেলওয়ে এফসি-র কথা। তাঁর সঙ্গে কথা বলতে গেলেই তিনি বলতেন, রেলওয়ে ফুটবল ক্লাবে আমার জন্ম। এরিয়ান মামার বাড়ি। ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান মাসি, পিসির বাড়ি। ফুটবলার হিসাবে যেমন তিনি ছিলেন দলের বড় ভরসা, তেমনই অনেকেই বলতেন তিনি ছিলেন কলকাতা ফুটবলের জলজ্যান্ত এনসাইক্লোপিডিয়া ৷ কোন ম্যাচে কত গোল হয়েছিল, কারা গোল পেয়েছেন সবই ঠোঁটস্থ ছিল তাঁর ৷
শেষ জীবনের সঙ্গী বলতে ছিল রবীন্দ্রসঙ্গীত ও রেডিও। মাঝে মধ্যে গলা ছেড়ে রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতেও শোনা যেত তাঁকে। একটা সময়ে নিজে বেহালা বাজাতেন। বয়সের কারণে শেষ দিকে অবশ্য বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সেটাও। দীর্ঘদিন ছোট ছোট ফুটবলারদের অনুশীলন করিয়েছেন সনৎ। জন্মদিনে তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। আজ তাঁর প্রয়াণে স্বাভাবিকভাবেই শোকাহত ময়দান ৷
Be the first to comment