শেষজীবনেও রাজনীতির শিকার হলেন সন্ধ্যা

Spread the love

সদ্যই প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। গীতশ্রীর প্রয়াণে মুহ্যমান বাংলা। শোকজ্ঞাপন করেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার দিল্লিতে যাওয়ার আগে সন্ধ্যাদেবীর মৃত্যু নিয়ে মন্তব্য করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর দাবি, নোংরা রাজনীতির শিকার হয়েছেন সন্ধ্যা। গায়িকার পদ্মশ্রী প্রত্যাখ্যানকে কেন্দ্র করে রাজনীতি হয়েছে বলে  দাবি করেন দিলীপ।

দিলীপের কথায়, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখের। অনেক বয়স হয়েছিল। বাংলা সংস্কৃতি জগতের একটা স্তম্ভ ছিলেন তিনি। অনেকদিন ধরে নিষ্ক্রিয় ছিলেন। তাঁর জায়গা পূরণ হওয়ার নয়। একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, পদ্মশ্রী পুরস্কার নিয়ে তাঁর সঙ্গে নোংরা রাজনীতি করা হয়েছে। তিনি পুরস্কার নিতে চান কি না,  তার কোনও অডিয়ো বা ভিডিয়ো আমরা দেখতে পেলাম না। জোর করে তাঁর নামে চাপিয়ে দেওয়া হলো। তৃণমূলের লোকেরা নোংরা রাজনীতি করে নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করেছে। সিপিএম যেমন বুদ্ধবাবুকে নিয়ে রাজনীতি করেছে!

মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। মৃত্যু কালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। মঙ্গলবার সকাল থেকে সঙ্গীত কিংবদন্তীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার খবর আসে। বিকেলে তা আরও খারাপ হয়। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ হাসপাতালেই মৃত্যু হয় তাঁর।

কিছুদিন আগেই পদ্মশ্রী বিতর্কে নাম জড়িয়েছিল প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পীর। তারপর পরেই করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন সন্ধ্যাদেবী। ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ার পাশাপাশি তাঁর হার্টেও সমস্যা দেখা যায় তাঁর। সন্ধ্যার পদ্মশ্রী সম্মান প্রত্যাখ্যানকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতি সরগরম হয়ে ওঠে। সূত্রের খবর, এই নিয়ে মানসিকভাবে কিছুটা খারাপ লাগা কাজ করছিল শিল্পীর।

যদিও, সন্ধ্যাদেবীর এই পদক্ষেপকে সমর্থন করে রাজ্যের শাসকদল থেকে আপামর শিল্পীমহল। মেয়র ফিরহাদ হাকিম দাবি করেন বাংলাকে ভালবেসেই পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছেন সন্ধ্যাদেবী। অন্যদিকে, তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় মনে করেন, মোদী সরকারের ‘দেখনদারি উদারতায়’ সায় দেননি সন্ধ্যা। শিল্পী শুভাপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় যদিও বলেন, “সন্ধ্যাদেবীর এটা বয়স নয়, পদ্মশ্রী পাওয়ার। আর যেভাবে ওঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল সেভাবে কোনও শিল্পীকে সম্মান জানানো যায় না।”

সমস্ত বিতর্কের মাঝে খোদ গীতশ্রীর কী মন্তব্য? তিনি বলেছিলেন, আমি ওঁদের জানিয়ে দিয়েছি, পদ্মশ্রী আমি অ্যাক্সেপ্ট করব না। সোজাসুজি বলেছি, মেরা দিল নেহি চাহতা হ্যায় (আমার মন চাইছে না)। ম্যায় নেহি লুঙ্গি (আমি গ্রহণ করব না)। আমাকে ওঁরা কারণ জিজ্ঞেস করেছিল। বলেছি, ওই একটাই কারণ, মেরা দিল নেহি চাহতা হ্যায়। আমার তো এতটা বয়স হয়েছে। ব্যাস, এই টুকুই জানিয়েছি। বাড়াবাড়ি আর কোনও কথাই বলিনি।” কিন্তু, বিজেপি বরাবর দাবি করে এসেছিল, রাজনীতি করেই সন্ধ্যাদেবীকে পুরস্কার নিতে দেওয়া হয়নি। সেই বিতর্কই ফের উস্কে দিলেন দিলীপ, এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*