ভোলে বাবা পার লাগাও, ত্রিশূলধারী শক্তি জোগাও!’
তাঁর অভিনীত বিখ্যাত সিনেমা ‘বাবা তারকনাথ’-এর জনপ্রিয় গানটির কথা অনেকেই আওড়াচ্ছেন বর্ষশেষের বেলায়। সৌজন্যে তিনি নিজেই। মেদিনীপুর কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ তথা বর্ষীয়ান অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায়।
কেন?
এ দিন সংসদের জিরো আওয়ারে বলতে উঠেছিলেন সাংসদ। সেই চোদ্দর ভোটে জিতেছিলেন। আরেকটা লোকসভা ভোট আসতে চলল। সাড়ে চার বছরে এই প্রথমবার পার্লামেন্টে বক্তৃতা দিলেন সন্ধ্যাদেবী। যা দেখে অনেকেই বলছেন, অ্যাদ্দিনে ভোলেবাবা তাঁকে বলার মতো শক্তি জুগিয়েছেন। বলতে তো দাঁড়ালেন। কিন্তু কী বললেন?
দাবি জানালেন, পোস্ট অফিস ডিজিটাল করা হোক। মোদীকে খোঁচা দিয়ে বলেন, একদিকে দেশকে ডিজিটাল করার কথা বলা হচ্ছে, অন্যদিকে পোস্টঅফিসগুলোই ডিজিটাল নয়। এটিএম পরিষেবার হালও তথৈবচ। দাবি জানিয়ে বলেন, পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ রাজ্যের সমস্ত পোস্টঅফিসগুলির আধুনিকীকরণ প্রয়োজন।
এত বিষয় থাকতে পোস্টঅফিস নিয়ে কেন তিনি বলতে গেলেন তা অনেকেই বুঝে উঠতে পারছেন না। তবে তৃণমূলের এক সাংসদ বলেন, এখনও গ্রামের মানুষ পোস্ট অফিসকে যথেষ্ট ব্যবহার করেন। গ্রামীণ অর্থনীতিতে এটি একটি উল্লেখযোগ্য মাধ্যম। সে দিক থেকে সন্ধ্যা রায়ের বক্তব্য যথেষ্ট যুক্তিসঙ্গত।
চোদ্দর ভোটে যখন তিনি প্রার্থী হলেন, প্রচারে বেরোতেই হামলে পড়েছিল কেশিয়াড়ি, নারায়ণগড়-সহ একাধিক এলাকার জনতা। মঞ্চে রাজনৈতিক কথা বলার আগে সন্ধ্যাদেবীর কাছে জনতার দিক থেকে অনুরোধ ভেসে আসত, ‘বাবা তারকনাথ’ ছবির একটি গানের দু’কলি অন্তত যেন শোনান। নিরাশ করতেন না। ভোটের সময় জনতাই যখন দেবতা, তাই সন্ধ্যা রায় প্রচার মঞ্চ থেকে গেয়ে উঠতেন, “আজ তোমার পরীক্ষা ভগবান!” কিন্তু রাজনীতি সম্ভাবনার খেলা। কখন কী হয় কেউ বলতে পারেন না।
আরেকটা ভোট এসে গেল। এখন অনেকের মনেই প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে, উনিশের ভোটে কি দিদি আর সন্ধ্যা রায়কে প্রার্থী করবেন? পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, সেটা আঁচ করেই বোধহয় পার্লামেন্টে বক্তৃতা দিয়ে সন্ধ্যা রায় বোঝাতে চাইলেন, দিদি আমি থাকতে চাই।
কিন্তু শেষ কথা তো বলবেন দিদিই। সেটা জানেন সন্ধ্যা রায়ও।
Be the first to comment