মঙ্গলবার ভোটের ফল প্রকাশ হতে শুরু করার কিছুক্ষণের মধ্যে বোঝা যায়, পিছিয়ে পড়ছে বিজেপি। তাদের দীর্ঘকালের জোটসঙ্গী শিবসেনা কটাক্ষ করে, মানুষ বিজেপির উদ্দেশে একটি স্পষ্ট বার্তা দিতে চাইছেন। শাসক জোটের এরপর সতর্ক হওয়া উচিত। তাদের ভেবে দেখা উচিত, কেন এমন হল?
শিবসেনার মুখপাত্র তথা রাজ্যসভা সদস্য সঞ্জয় রাউত বলেন, ভোটের ফলাফলের যা ট্রেন্ড, তাতে বোঝা যায়, বিজেপির বিজয়রথ থেমেছে। শিবসেনা কেন্দ্রে ও মহারাষ্ট্রে বিজেপির শরিক হওয়া সত্ত্বেও দীর্ঘকাল ধরে দুই দলের মধ্যে সম্পর্ক ভালো নেই। শিবসেনার অভিযোগ, বিজেপি বড়দাসুলভ আচরণ করে। নরেন্দ্র মোদীকে এনডিএ-র একমাত্র নেতা বলে তুলে ধরতে চায়। অন্যদিকে বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে মোদীর প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করেন।
অটলবিহারী বাজপেয়ী এবং লালকৃষ্ণ আদবানির মতো নেতা মহারাষ্ট্রে কখনও সংগঠন গড়তে চেষ্টা করেননি। তাঁরা ধরে নিতেন, ওই রাজ্যে বাল ঠাকরের দলের প্রাধান্য মেনে নিতে হবে। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সরকারে তাঁদের প্রাধান্য মেনে নেবে শিবসেনা। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী এই নীতিতে বিশ্বাসী নন। তিনি মহারাষ্ট্রে বিজেপির সংগঠন গড়ার দিকে মনোযোগ দিয়েছিলেন। তখন থেকেই শিবসেনার সঙ্গে বিজেপির সম্পর্কে দ্রুত অবনতি হতে থাকে।
মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে, ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ও শিবসেনার মধ্যে আসন ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধ শুরু হয়। কিন্তু বিজেপি নেতা গোপীনাথ মুণ্ডে সময়মতো হস্তক্ষেপ করে বিরোধ মিটিয়ে নেন। ২০০৭ ও ২০১২ সালে বিজেপি নেতারা দাবি করেন, শিবসেনা তাঁদের সঙ্গে শত্রুর মতো আচরণ করেছে। শিবসেনা দু’বার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এনডিএ প্রার্থীকে সমর্থন না করে কংগ্রেসের প্রার্থী প্রতিভা পাতিল ও প্রণব মুখোপাধ্যায়কে ভোট দেওয়ায় বিজেপির ওই ধারণা হয়।
বিজেপি এরপর নীতিন গডকরিকে দলের সভাপতি করে। তাতে উদ্ধব অসন্তুষ্ট হন। কারণ নাগপুরের বাসিন্দা নীতিন এমএনএস নেতা রাজ ঠাকরের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। রাজের সঙ্গে উদ্ধবের সম্পর্ক ভালো নয়।
২০১৪ সালে বিজেপির সভাপতি হন অমিত শাহ। সেবছরই মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচন ছিল। অমিত শাহ শিবসেনাকে স্পষ্ট বার্তা দেন, আগের মতো কম সিট নিয়ে সন্তুষ্ট থাকবে না বিজেপি। শিবসেনা যতগুলি আসনে লড়াই করবে, ততগুলিই দিতে হবে বিজেপিকে।
এরপর মঙ্গলবার পাঁচ রাজ্যে নির্বাচনে বিজেপির খারাপ ফলের পরে শিবসেনা মন্তব্য করেছে, বিজেপির বিজয়রথ থামল।
Be the first to comment