ছুটির সকাল। বাচ্চাদের নিয়ে তাই অনেকেই ভিড় জমিয়েছিলেন আফ্রিকান সিংহ-সিংহীর খাঁচার সামনে। কখন ভিড় ঠেলে গুটিগুটি পায়ে পরিখা পেরিয়ে বছর কুড়ির যুবক এগিয়ে গিয়েছেন, খেয়াল করেননি কেউই। যত ক্ষণে সবার চোখে পড়ল, অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছে। খাঁচার ভিতরে তখন সিংহ-মানুষে টানাটানি। শনিবারের ঘটনাস্থল চিলের সান্তিয়াগোর মেট্রোপলিটান চিড়িয়াখানা। সেই বীভৎস দৃশ্য দেখে আঁতকে উঠেছেন সবাই। বাচ্চাদের চোখ ঢেকে দিয়েছেন বাবা-মায়েরা।
সিংহের খাঁচায় – আত্মহত্যার উদ্দেশে চিড়িয়াখানায় সিংহের খাঁচায় ঢুকে পড়লেন এক নগ্ন যুবক (২০)। সিংহের খাবার হতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে দুই সিংহকে হত্যা করে ওই যুবককে উদ্ধার করেছে চিড়িয়াখানার কর্মীরা। গুরুতর আহত যুবককে নেওয়া হয় নিকটস্থ হাসপাতালে। স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার সকালে চিলির সান্তিয়াগোতে এ ঘটনা ঘটে।
ডেইলি মেইল’ জানিয়েছে, স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে যুবকের পরিচয় দেওয়া হয়েছে ফ্রাঙ্কো লুইস ফেরাদা রোমান। তাঁর প্যান্টের পকেটে আত্মহত্যার কথা লেখা চিরকুট পাওয়া গেছে। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, সাধারণ দর্শনার্থীর মতোই টিকেট কেটে ঢুকেছিলেন ফ্রাঙ্কো লুইস। ঘুরতে ঘুরতে সবার অলক্ষে তিনি সিংহের খাঁচার কাছে যান। পরে সিংহের খাঁচার ওপরে থাকা খোলা অংশ দিয়ে তিনি খাঁচার মধ্যে ঢুকে পড়েন। এর আগেই অবশ্য ফ্রাঙ্কো তাঁর সব কাপড় খুলে ফেলেন। চিড়িয়াখানার কয়েকজন দর্শনার্থী বলেন, ফ্রাঙ্কো লুইস সিংহের খাঁচায় ঢুকে সেখানে থাকা কয়েকটি সিংহের দিকে চিৎকার করতে থাকেন। দৃষ্টি আকর্ষণ হওয়ার পর তিনটি সিংহ তাঁর ওপর হামলে পড়ে। সিংহগুলো থাবা দিয়ে ফ্রাঙ্কোকে টানা হেচড়া করতে থাকে। ওই সময় তিনি চিৎকার করে যিশুখ্রিস্ট ও ধর্ম নিয়ে কিছু বলছিলেন।
চিড়িয়াখানার পরিচালক আলেজান্দ্রা মনতালভা বলেন, সিংহের খাঁচা থেকে যুবককে ছাড়ানোর চেষ্টা করেন তাঁর কর্মীরা। তবে কোনোভাবেই ওই যুবককে সিংহের কাছ থেকে উদ্ধার করা যাচ্ছিল না। দ্রুত সিংহকে অজ্ঞান করে এমন কোনো ওষুধও তাঁদের কাছে ছিল না। তাই বাধ্য হয়ে গুলি করে দুটি সিংহকে হত্যা করেন চিড়িয়াখানার কর্মীরা। স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, আত্মহত্যা করার চেষ্টায়ই সিংহের খাঁচায় ঢুকেছিলেন ফ্রাঙ্কো লুইস। তাঁর প্যান্টের পকেটে আত্মহত্যার কথা লেখা চিরকুট পাওয়া গেছে। পৃথিবী ধ্বংস হবে এমন বিশ্বাসে এভাবে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ফ্রাঙ্কো। শনিবার রাতে জানা গেছে, গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া ফ্রাঙ্কোর জীবন আশঙ্কা দূর হয়েছে।
Be the first to comment