কোলাঘাট থেকে সাঁতরাগাছি রোজের যাতায়াত। দিন গুজরানের আশায় সকাল সকাল বেরিয়ে যেতেন। রাত সাড়ে আটটার মধ্যেই ঘরে ঢুকে পড়তেন। মঙ্গলবার যেন বেশিই দেরি করে ফেলছিলেন কমলাকান্ত সিংহ। ৯টা বেজে গেলেও তাঁর খবর পায়নি পরিবার। পদপিষ্ট হওয়ার খবর মিললেও মৃতদের মধ্যে একজন যে কমলাকান্তই, তা ভাবেননি মা কালী সিংহ। দুঃস্বপ্ন যেন। কমলকান্ত যে আর ফিরবে না। চোখের জল শুকিয়ে যেতেই কপালে ভাঁজ। এরপর? অন্ন সংস্থানের পথ কোথায়?
কোলাঘাটের প্রত্যন্ত রাইন গ্রামে কমলাকান্তের টিনের চালের বাড়ি। মা কালী সিংহ, স্ত্রী মিতা ও ১৩ বছরের মেয়ে পৌলমীকে নিয়ে সংসার। ঠিকাদারের হয়ে রঙের কাজ করতেন কমলাকান্ত। প্রতিদিনই সাঁতরাগাছি-সহ হাওড়ার বিভিন্ন জায়গায় যেতেন। দিনের শেষে হাতে পাওয়া মজুরিতেই করা হতো পরের দিনের বাজার। সাঁতরাগাছির দুর্ঘটনা কেড়ে নিয়েছে সংসারের একমাত্র রোজগেরে সদস্যকে। কাঁদতে কাঁদতে বলেই ফেললেন কালী সিংহ। মঙ্গলবার রাতে হাওড়া জেলা হাসপাতাল থেকে কমলাকান্তের মৃতদেহ নিয়ে আসেন প্রতিবেশীরা।
রাজ্য সরকার, রেল দফতরের ক্ষতিপূরণ হাতে কবে আসবে, সেই নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন কমলাকান্তের পরিবার। নিশ্চিন্ত আয়ের ব্যবস্থা না করে দিলে সমস্যার সমাধান নেই। জানালেন কমলকান্তের স্ত্রী। তাই, ক্ষতিপূরণ আসুক নিয়ম মেনেই, আপাতত একটা চাকরি দিক রেল, আর্জি স্ত্রী মিতা সিংহের।
Be the first to comment