প্রবল শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে গত ১৭ জুন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বলিউডের কোরিয়োগ্রাফার সরোজ খান। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল ৭১ বছরের এই কিংবদন্তী কোরিওগ্রাফারের। সরোজ খান ভর্তি ছিলেন মুম্বইয়ের গুরু নানক হাসপাতালে। সরোজ খানের পরিবারে রয়েছেন তাঁর স্বামী, ছেলে এবং দুই মেয়ে।
১৯৪৮ সালের ২২ নভেম্বর মুম্বই শহরে জন্ম তাঁর। তাঁর আসল নামছিল নির্মলা নাগপাল। মাত্র তিন বছর বয়সে শিশু শিল্পী হিসেবে বলিউডে তাঁর কেরিয়ারের সূচনা। ১৯৫০-এর দশকে তিনি যোগ দেন ব্যাক আপ ডান্সার হিসেবে। দীর্ঘ সময় কাজ করেছেন তত্কালীন প্রখ্যাত কোরিওগ্রাফার বি সোহনলালের সঙ্গেই। তাঁকেই তিনি আজীবন নিজের মাস্টারজী মেনে এসেছেন।
স্বাধীন কোরিওগ্রাফার হিসেবে তাঁর কাজ শুরু ১৯৭৪ সালে গীতা মেরা নাম ছবি দিয়ে। তবে তাঁর কেরিয়ার উড়ান নেয় শ্রীদেবী এবং মাধুরী দীক্ষিতের সঙ্গে কাজের পরই। ১৯৮৭ সালে মিস্টার ইন্ডিয়া, ১৯৮৬ সালের নাগিনা, ১৯৮৯ সালে চাঁদনি, ১৯৮৮ সালে তেজাব এবং ১৯৯০ সালে থানেদার ছবি তাঁকে বলিউডে প্রতিষ্ঠা দেয়। দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে, হাম দিল দে চুকে সনম, দেবদাস, জব উই মেট, মণি কর্নিকার মতো ছবির নাচের দৃশ্যও উজ্জ্বল তাঁর অবদানের জন্যেই। বহু বছরের বিরতির পর ফের তিনি তাঁর পছন্দের অভিনেত্রী মাধুরী দীক্ষিতের সঙ্গে কাজ করেন কলঙ্ক ছবিতে। সেই তাঁর শেষ কাজ।
তাঁর অনন্য সব নাচের স্টেপ আজও সমান জনপ্রিয় বলিউড এবং সাধারণ মানুষের কাছে। তাঁর দীর্ঘ কেরিয়ারে এমন একটা সময় ছিল যখন নায়িকারা তিনি ছাঁড়া আর কারও সঙ্গে কাজ করতেও রাজি হতেন না। ২০০৫ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত সরোজ খান একটি টিভি রিয়ালিটি শো-এর বিচারকও ছিলেন।
২০২০ সালটা বলিউডের জন্যে খুবই খারাপ যাচ্ছে। বছরের শুরু থেকেই একের পর এক মৃত্যু সংবাদের শোকস্তব্ধ টিনসেল টাউন। প্রথম ধাক্কাটা এসেছিল ইরফান খানের মৃত্যু দিয়ে। তাঁর প্রয়াণের ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতে মারা যান ঋষি কাপুর। দুই কিংবদন্তী অভিনেতার মৃত্যুশোক বলিউড যখন ধীরে ধীরে কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে, তখনই ১৪ জুন এল আরও বড় ধাক্কা। রবিবারের দুপুরে জানা গেল বান্দ্রায় নিজের ফ্ল্যাটের গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন প্রতিভাবান অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত।
Be the first to comment