শুক্রবার থেকে বন্ধ স্কুল, দিল্লি দূষণ নিয়ে কেন্দ্রকে ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা সুপ্রিম কোর্টের

Spread the love

‘কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। দূষণ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে… শুধু সময় নষ্ট হচ্ছে’ দিল্লি দূষণের প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারকে এ ভাবেই ভর্ৎসনা করলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানা। স্কুল খুলে দেওয়া প্রসঙ্গেও রাজ্য সরকারকে ভর্ৎসনা করেছে কোর্ট।

একই ভাবে গোটা ঘটনায় কেন্দ্রের উদাসীনতাকেও দায়ী করা হয়েছে। মাত্রাছাড়া দূষণ, শুক্রবার থেকে বন্ধ থাকবে দিল্লির সমস্ত স্কুল। একটি সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানালেন দিল্লির পরিবেশ মন্ত্রী গোপাল রায়। পরবর্তী নোটিশ না দেওয়া পর্যন্ত এই সিদ্ধান্তই বহাল থাকবে বলে জানানো হয়েছে। রাজধানীর বাতাসে ক্রমশ বেড়ে চলা দূষণ এই মুহূর্তে গোটা দেশের মাথা ব্যথার কারণ। এই নিয়ে চার সপ্তাহ সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল জবাব চলছে। বৃহস্পতিবার গত কয়েক সপ্তাহের পর্যবেক্ষণের পর এ দিন রাজ্য সরকারকে ভর্ৎসনা করেন প্রধান বিচারপতি। এ দিন কেন্দ্রকে ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট জানায় শিল্প এবং যানবাহনের দূষণ কমাতে দ্রুত পদক্ষেপ করতে হবে।

দীপাবলির পর থেকেই দিল্লির বাতাসে দূষণ বাড়ছে। খেতে ফসল উঠে যাওয়ার পর আগুন লাগানোর ঘটনাও রাজধানীর বাতাস ভারী করে প্রতিবছর। এক মাসে সে দূষণ এক ফোঁটাও কমেনি, উল্টে শীত যত বাড়ছে, দূষণও বাড়ছে। এরই মধ্যে স্কুল খুলে যাওয়া নিয়ে প্রধান বিচারপতি কেজরিওয়াল সরকারকে ভর্ৎসনা করে বলেন, ‘তিন, চার বছরের ছেলেমেয়েরা স্কুলে যাচ্ছে আর প্রাপ্ত বয়স্করা ঘর থেকে কাজ করছে! আমার মনে হয় সরকার পরিচালনার কাজে আদালত এক জন প্রশাসন নিয়োগ করলেই ভাল হবে।’

এর উত্তরে সরকার পক্ষের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি বলেন, ‘অতিমারী পরিস্থিতিতে পড়াশোনা নষ্ট হচ্ছে বলে এর আগে বহু বিতর্ক হয়েছে। তাই স্কুল খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে সরকার অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থাও রেখেছে। সকলকে বাধ্যতামূলক ভাবে স্কুলে আসতে বলা হয়নি।’ প্রত্যুত্তরে প্রধান বিচারপতি রামানা বলেন, ‘অফলাইন ক্লাসের সুযোগ থাকলে কে বাড়িতে বসে থাকবে? আমাদের বাড়িতেও সন্তান আছে, নাতি নাতনিরা রয়েছে। আমরা দেখেছিল অতিমারী পরিস্থিতিতে বাড়ি বসে থেকে থেকে তারা কতটা অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। তারা কেউ বাড়িতে বসে থাকতে রাজি নয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরকার পদক্ষেপ না করলে আদালত আগামী কাল কড়া পদক্ষেপ করবে।’

অতিমারী পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন স্কুল কলেজ বন্ধ থাকার পর স্কুল খুলেছিল নভেম্বরে। কিন্তু দিল্লি দূষণের প্রেক্ষিতে সমস্ত স্কুল ১০ দিনের জন্য বন্ধ করে দেয় রাজ্য সরকার। তারপর ফের সোমবার স্কুল খুলেছে। কিন্তু, দূষণ কমেনি। শিল্প ক্ষেত্রে থেকে ছড়ানো বায়ু দূষণ প্রসঙ্গেও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সর্বোচ্চ আদালত। রাজধানী ও তৎসংলগ্ন এলাকার জন্য গঠিত CAQM বা কমিশন ফর এয়ার ক্যোয়ালিটি ম্যানেজমেন্টের হাতে কোনও আসলে কোনও ক্ষমতাই নেই বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়।

রাজ্যের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে প্রধান বিচারপতি রামানা বলেন, এই মামলা যখন শুরু হয়েছিল তখন রাজধানীর দূষণ একটা নির্দিষ্ট মাত্রায় ছিল। আপনারা আইনজীবীরা কত তর্ক বিতর্ক করছেন দিনের পর দিন। কত কী পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে দাবি করছে সরকার। কিন্তু তারপর একটা সহজ প্রশ্ন উঠছে, এত কিছু করা হলে রাজধানীর দূষণ কমছে না কেন?

বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, কোনও কাজই করা হয়নি। আদালতের নির্দেশ মানেনি সরকার। রাস্তার মাঝখানে কত মানুষ, ‘পরিবেশ বাঁচাও’ পোস্টার হাতে বসে আছেন। কিন্তু ওই স্লোগানই সার। শুক্রবার দিল্লি দূষণ নিয়ে ফের শুনানি হবে সুপ্রিম কোর্টে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*