অমৃতা ঘোষ:-
শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। এই জগতে মানুষ গড়ার কারিগর বলা হয় শিক্ষক – শিক্ষিকাদের। সেইরকম ই এক কারিগরের দেখা মিলল তারা সুন্দরী বালিকা বিদ্যালয়ে। এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জীবনে চলার মূল্য বোধের শিক্ষা, প্রতিবাদের শিক্ষা দিচ্ছেন তাঁর ছাত্রীদের।
আরজি কর কাণ্ড নিয়ে যখন উত্তাল গোটা বাংলা তখন তারাসুন্দরী বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মন কেড়ে নিলেন নেটিজেনদের। সরকারি কর্মচারী হয়েও যেভাবে তিনি নির্ভয়ে তাঁর ছাত্রীদের সঠিক শিক্ষা দিলেন তাতে মুগ্ধ সবাই।
তারাসুন্দরী বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার বক্তব্যের যে ভিডিয়ো এদিন ভাইরাল হয়েছে সেখানে তাঁকে বলতে দেখা যাচ্ছে, ‘এটা আমার কাছে খুব আনন্দের যে তোমরা নিজেরা আমাকে চিঠি করেছ যে তোমরা এই প্রতিবাদে সামিল হতে চাও। আমরা সরকারি চাকরি করি যাঁরা অনেক সময় তাঁদের অনেক বাধ্যবাধকতা থাকে। ওই যে পুলিশরা আজকে এসেছে, আমরা গতকাল পর্যন্ত ৩ বার চিঠি করেছি। কিন্তু এটা ওদের দোষ নয়। আসলে ওই পোশাকটার কিছু নিয়ম আছে। কিন্তু আজকে ওরা যে এসেছে সেটার কারণ ওদের পোশাকের নিচে যে মনুষ্যত্ব আছে সেটার টানে। অফিসিয়ালি কোনও অনুমতি আমরা পাইনি। আর আমরাও ঠিক করেছিলাম যে যদি জেলে ঢুকতেই হয় তাহলে রাস্তায় নেমেই ঢুকব। ঘরে বসে থাকব না।’
তিনি এদিন আরও বলেন, ‘অন্যায়ের প্রতিবাদ করার জন্য সবসময় হিল্লিদিল্লি পৌঁছতে হবে এমনটা নয়। বাড়ি থেকেই তুমি তোমার প্রতিবাদ শুরু করো। তোমার কাজ তুমি করো।’ মেয়েরা কেনই বা নাইট ডিউটি করতে পারবেন না সেবিষয়ও তিনি প্রশ্ন রাখেন। একই সঙ্গে দুর্নীতির বিষয়েও ছাত্রীদের ‘জ্ঞান’ দেন।
তারাসুন্দরী বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা এদিন আরও বলেন, ‘নিজেদের অধিকারের জন্য অন্য যে কোনও নির্যাতিতার পাশে দাঁড়াবে। এটা বুঝে রাখো। যদি রাষ্ট্র ভেঙে পড়ে তাহলে ১৮ বছরের নিচের মানুষদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যদি একটা ১২ বছরের মেয়ের ধর্ষণ আটকাতে না পারি তাহলে একটা ১২ বছরের মেয়ের সিদ্ধান্তকে আমাদের মর্যাদা দিতে হবে। নিজেদের কখনও ঠকাবে না। অন্য কোনও মেয়ের প্রতি অন্যায় হয় তাঁর পাশে দাঁড়াবে।’
আপনাদের এই শিক্ষা যদি যুব সমাজ গ্রহণ করেন, তবে নিশ্চিত জাগরণ ঘটবেই।
Be the first to comment