ইস্তফার পরই গ্রেফতার তমলুকের “দুর্নীতিবাজ” পঞ্চায়েত প্রধান, ঘনিষ্ঠতা শুভেন্দুর সঙ্গেও

Spread the love

দুর্নীতির সঙ্গে কোনওরকমের আপোস নয়। দুর্নীতির প্রশ্নে দল যে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে চলবে তা একের পর এক সিদ্ধান্তে স্পষ্ট করছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পূর্ব মেদিনীপুরে দলের পঞ্চায়েত প্রধানের নামে “এক ডাকে অভিষেক” হেল্পলাইনে অভিযোগ জমা পড়েছিল। দলীয় স্তরে তদন্ত করে দেখে সেই অভিযোগের প্রমাণ মিলতেই প্রধানকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন অভিষেক। গত, মঙ্গলবার রাতে তৃণমূলের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সেখানে পূর্ব মেদিনীপুরের শান্তিপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এসকে সেলিম আলিকে ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। দুর্নীতির অভিযোগ দলীয় তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে পদত্যাগ করতে বলা হয়। এরপরই বেশি রাতের দিকে দলের নির্দেশ মেনে বিডিও-এর কাছে পদত্যাগ পত্র পাঠিয়ে দেন পূর্ব মেদিনীপুরের শান্তিপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এসকে সেলিম আলি।

কিন্তু এখানেই শেষ নয়। দলীয় ভাবে দুর্নীতি প্রমাণ হওয়ার পর ইস্তফা দিয়েই রেহাই মেলেনি সেলিম আলির। ২৪ ঘণ্টা কাটার আগেই দুর্নীতির অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেফতার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক সাংগঠনিক ইউনিটের শান্তিপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের সদ্যপ্রাক্তন হওয়া প্রধান এস কে সেলিম আলি। অভিযোগ, পঞ্চায়েত প্রধানের পদে থেকে কোটি-কোটি টাকার দুর্নীতি, পাহাড় প্রমাণ সম্পত্তি ছিল তাঁর নামে। মাত্র বছর দুয়েকের মধ্যেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলা-সহ অন্যান্য জেলাতে ৮৩টি মূল্যবান প্লট কেনা হয়েছিল তাঁর নামে। এবার সেই পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতির অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।

সেলিম একটা সময় সাধারণ সিপিএমের কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। এরপর রাজ্যে পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও তৃণমূলে যোগদান করেন। শুভেন্দু অধিকারীর ছত্রছায়াতে এসে এরপর আর তাঁকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। অভিযোগ, শান্তিপুর ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির প্রধান পদে থেকে তিনি লাগাতার দুর্নীতি করেছেন। অভিযোগ, তৎকালীন এই এলাকার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিবাকর জানা ওরফে লালুর সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে একটি ঠিকাদারি সংস্থা খোলেন। এলাকায় প্রভাব খাটিয়ে একের পর এক মূল্যবান জমি কেনাবেচার মাধ্যমে রীতিমতো এলাকার ত্রাস হয়ে ওঠেন এই দুই নেতা। বিষয়টি নজর এড়ায়নি তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের। এরপরই তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, গত ৩ ডিসেম্বরে পূর্ব মেদিনীপুরেরই কাঁথিতে জনসভা করতে গিয়ে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায় “এক ডাকে অভিষেক” হেল্পলাইনে ফোন করে অভিযোগ জানাতে বলেছিলেন। সাধারণ মানুষের উদ্দেশে জানানো সেই ঘোষণার প্রেক্ষিতে সেলিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছিল বলে তৃণমূলের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। ওই অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতেই তাঁকে পদ থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে তৃণমূল।

“এক ডাকে অভিষেক” হেল্প লাইনে অভিযোগ জমা পড়ার পরেই দলের তরফে তদন্ত শুরু করা হয়। তদন্তে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ সত্যি প্রমাণিত হয় বলেই দলের দাবি। বেনামে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। তথ্য হাতে আসার পরই এক মুহূর্ত দেরি না করে সেলিমকে পদত্যাগ করতে বলা হয়।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*