মন্দিরের দরজা খুললেও ভিতরে প্রবেশের অধিকার পেলেন না ১০-৫০ বছর বয়সী মহিলারা

Spread the love

শবরীমালায় মহিলাদের প্রবেশাধিকার ঘিরে গত কয়েকদিন ধরেই বিক্ষোভে উত্তাল কেরল। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বুধবার বিকেলে মন্দিরের দরজা খুললেও ভিতরে প্রবেশের অধিকার পেলেন না ১০-৫০ বছর বয়সী মহিলারা। বরং রাস্তা আটকে মহিলাদের মারধর, হেনস্থাকে ঘিরে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিল মন্দির চত্বর। দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ালেন বিক্ষোভকারীরা। গতকালের ঘটনার পর আজ গোটা রাজ্যেই ১২ ঘণ্টার বনধের ডাক দিয়েছে ‘শবরীমালা বাঁচাও কমিটি’ নামে একটি সংগঠন।

প্রশাসন সূত্রে খবর, বিক্ষোভ-আন্দোলনকে ঘিরে রাজ্যের চার জায়গার পরিস্থিতি এখনও উত্তপ্ত। সান্নিধানাম, পাম্বা, নীলাক্কাল ও এলাভাঙ্গালে জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। মন্দির চত্বর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরত্বে নীলাক্কাল বেস ক্যাম্পেই গতকাল মহিলাদের পথ আটকাচ্ছিলেন বিক্ষোভকারীরা। হাতে আয়াপ্পার ছবি ও বিজেপির পতাকা লাগানো ঝান্ডা নিয়ে বিক্ষোভকারীদের পুরোভাগে ছিলেন মহিলারাই। বাস, অটো, ট্যাক্সিতে চলেছিল তল্লাশি ও ধরপাকড়। দুই মহিলাকে মন্দিরে ঢুকতে বাধাও দেওয়া হয় ওই দিন।
প্রথা মেনে মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে বুধবার বিকেল  থেকে পাঁচ দিনের জন্য খুলেছে শবরীমালা মন্দির। ফের মন্দিরের দরজা বন্ধ হবে ২২ অক্টোবর। দেশের শীর্ষ আদালতের রায়ে ১০০ বছরের প্রাচীন রীতি ভেঙে এই প্রথমবার শবরীমালায় ঢোকার অনুমতি পেয়েছিলেন যে কোনও বয়সের মহিলারা। কিন্তু, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরোধিতা করে ৫০ বছরের কম বয়সী মহিলাদের রুখতে পথে নামে ‘শবরীমালা বাঁচাও কমিটি’ নামে একটি সংগঠন। বুধবার বিকেল ৫টায় মন্দির খোলার আগেই সকাল থেকে  মন্দির চত্বরে ভিড় জমাতে শুরু করেন মহিলা ভক্তেরা।  নীলাক্কাল থেকে বাসে চেপে মন্দিরে আসার চেষ্টা করেন অনেক সাংবাদিক ও কলেজ পড়ুয়ারাও। বিক্ষোভকারীরাও বাসে করে এসে জড়ো হন।  ‘স্বামীয়ে শরণম আইয়াপ্পা’ স্লোগান দিতে দিতে রাস্তা অবরোধ করেন। বিক্ষোভকারীদের মন্দিরের প্রবেশপথ থেকে সরিয়ে দিতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। পাল্টা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছুঁড়তে শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা। দু’পক্ষের সংঘর্ষের রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় মন্দির চত্বর।

শবরীমালায় প্রবেশের মুখে বাধা দেওয়া হয় দুই মহিলাকেও। তাঁরা হলেন কেরলের এক সাংবাদিক লিবি সিএস ও দ্বিতীয় জন অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা মাধবী। এঁরাই প্রথম মন্দিরের উদ্দেশে পায়ে হেঁটে রওনা দিয়েছিলেন। মাধবী এসেছিলেন তাঁর পরিবারের সঙ্গে, লিবি তাঁর কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে। অভিযোগ তাঁদের জোর করে টেনে-হিঁচড়ে মন্দিরের সামনে থেকে সরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। পরে, পুলিশ এসে দুই মহিলাকে উদ্ধার করেন।

বিক্ষোভকারীদের হামলা থেকে রেহাই পায়নি পুলিশও। স্থানীয় টিভি চ্যানেলের সাংবাদিকদেরও বিক্ষোভকারীদের রোষের মুখে পড়তে হয়।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*